সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নে দিনভর উঠোন বৈঠক ও গণসংযোগ
দশ বছর আপনাদের এলাকায় কী কী উন্নয়ন হয়েছে তা সকলের সামনে পরিস্কার
‘এই অঞ্চলের মানুষগুলো নদী ভাংতি মানুষ। এই মানুষগুলো আগে রাস্তার পাশে নীচে খুপড়ি ঘর তুলে মানবেতরভাবে জীবন-যাপন করতো। বর্ষায় তারা নিদারুণ কষ্ট ভোগ করতো। সড়কে অনেক যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে রাস্তা থেকে ছিটকে ওই খুপড়ি ঘরগুলোতে গিয়ে পড়তো। এতে অনেকের জীবনহানি ঘটেছে। আর এই অসহায় নদী ভাংতি মানুষগুলোর জন্যে আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় ত্রিশটি আশ্রয়ন প্রকল্প করেছি। সেখানে ৩ হাজার ৭শ’ ৫০টি ঘর নির্মাণ করেছি। যেগুলোতে ওই নদী ভাংতি হাজার হাজার মানুষ থাকছে, তাদের একটা স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে। এ মানুষগুলো রাব্বুল আলামীনের কাছে শেখ হাসিনার জন্যে মন খুলে দোয়া করছে। আমিও একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই মানুষগুলোর জন্যে কিছু করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। তাদের দোয়ায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাকে কামিয়াবী করবেন এ দৃঢ় বিশ^াস আমার রয়েছে’।
কথাগুলো বেশ আত্মবিশ্বাস এবং গর্বের সাথে বললেন আসন্ন নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ¦ ডাঃ দীপু মনি।
তিনি ১২ ডিসেম্বর বুধবার চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নে গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠকে এ কথাগুলো বলেন। এ ইউনিয়নে ডাঃ দীপু মনি গতকাল প্রথম উঠোন বৈঠক করেন দক্ষিণ বালিয়া নরসিংহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। এ উঠোন বৈঠকটি বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে সমাবেশে পরিণত হয়। এরপর তিনি পর্যায়ক্রমে পূর্ব বাখরপুর তালীমুল কোরআন ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ, মধ্য বাখরপুর দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ ও দক্ষিণ মদনা মদিনা মার্কেট সংলগ্ন মাঠে উঠোন বৈঠক ও সমাবেশ করেন। মদিনা মার্কেট সংলগ্ন মাঠটিতে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। এছাড়াও তিনি পাটওয়ারী বাড়ি, ফকির বাড়ি, পশ্চিম মদনা রাঢ়ি বাড়িসহ আরো বেশকিছু এলাকায় বাড়ি বাড়ি ও ঘরে ঘরে গিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ ও কুশল বিনিময় করেন।
এসব উঠোন বৈঠক ও গণসংযোগে ডাঃ দীপু মনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, এই দশ বছর আপনাদের এলাকায় কী কী উন্নয়ন হয়েছে তা সকলের সামনে পরিস্কার। অথচ এর আগেও তো এই এলাকায় এমপি ছিলো। তারা তো নদী ভাঙ্গন থেকে চাঁদপুর ও হাইমচরকে রক্ষা করার উদ্যোগ নেয় নি, তারা তো নদী ভাংতি মানুষগুলোর কথা একটুও ভাবেনি। এমনকি তাদের (পূর্বের এমপিদের) বাড়ির রাস্তাটার উন্নয়নের কথাও তারা ভাবেন নি। কারণ, তারা তো এলাকায় থাকতো না, আসতো না। ভোটের সময় যে একবার এসেছে, এমপি হওয়ার পর আর তাদের চেহারাও এলাকার মানুষ দেখেনি। কিন্তু আমি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পরও প্রতিনিয়ত আপনাদের খোঁজ-খবর রেখেছি, অসংখ্যবার এলাকায় এসেছি, আপনাদের খুব কাছাকাছি থেকে সুখ-দুঃখের অংশীদার হয়েছি। এই দশ বছরে আমার নির্বাচনী এলাকায় ২শ’ ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হয়েছে, ১শ’ ৫৯টি ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করেছি, ৩৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছি, প্রায় সাড়ে তিনশত প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ও অর্ধশত হাইস্কুল, মাদ্রাসা এবং কলেজের নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। এছাড়া বহু মসজিদে সোলার প্যানেল এবং বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বহু সোলার স্ট্রিট লাইট লাগানো হয়েছে। এখন আর গ্রামে কোথাও অন্ধকার নেই। এগুলো হচ্ছে প্রকৃত জনসেবা। আর এসব কিছু করতে পেরেছি আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করায়। তাই আবারো আপনাদের দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছি। আগামী ৩০ ডিসেম্বর আপনারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারো আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আর আরো যেসব ছোটখাটো উন্নয়ন রয়েছে এবং বড় বড় কিছু স্বপ্ন বাস্তবায়ন যেমন সাড়ে ১০ হাজার একর জমি নিয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন, মেডিকেল কলেজ ও আধুনিক নৌ বন্দর নির্মাণ-এসব যেনো বাস্তবায়ন হয় সে সুযোগ আপনাদের করে দিতে হবে। এসব বাস্তবায়ন করার জন্যই আপনাদেরকে আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।
এসব উঠোন বৈঠক ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, চান্দ্রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ সর্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাহির হোসেন পাটওয়ারী, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল মুন্না, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউর রহমান পারভেজ, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম রেজওয়ান, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সাহিদা বেগমসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।