• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ভুয়া র‌্যাব পরিচয়ে ছিনতাই করত চক্রটি

প্রকাশ:  ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:২১ | আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৮:২৪
চাঁদপুর পোস্ট ডেস্ক
র‌্যাবের হাতে আটক সাত সদস্যের অপরাধ চক্র। ছবি: সংগৃহীত
প্রিন্ট

নিজেদের র‌্যাবের সদস্য বলে পরিচয় দিতেন তাঁরা। ব্যবহার করতেন র‌্যাবের জ্যাকেট, হাতকড়া, ওয়াকিটকি। তাঁদের কর্মকাণ্ড আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে র‌্যাবের মতো স্টিকার তৈরি করে তা লাগাতেন ভাড়া করা মাইক্রোবাসে। বিভিন্ন হাইওয়েতে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল এই চক্র। সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহককে লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়ে তাঁদের অপহরণ করে ছিনতাই করেন তাঁরা।

সম্প্রতি রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের সাত সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)। আজ সোমবার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

আটক করা ওই সাত ব্যক্তি হলেন কাসেম ওরফে জীবন (৫৮), ইব্রাহিম খলিল (৪০), জাকির হোসেন সুমন (২৭), বিল্লাল হোসেন আসলাম (৩২), আবদুল মন্নান (৫০), সোহাগ (২৭) ও মো. আরিফ (২৮)।

এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুটি হাতকড়া, একটি ওয়াকিটকি সেট, র‌্যাবের দুটি জ্যাকেট, একটি র‌্যাব বোর্ড, দুটি সিগন্যাল লাইট, ছয়টি বড় লাঠি, দড়ি, চোখ বাঁধার চারটি কালো কাপড়, ২৮ হাজার টাকা ও র‌্যাবের স্টিকারযুক্ত একটি কালো কাচের মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।

র‌্যাব জানায়, এই অপরাধী চক্রের মূল হোতা কাসেম। এই দলে ১০ থেকে ১১ জন স্থায়ী সদস্য রয়েছেন। এই সদস্যরা অনেক দিন ধরে নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। আরও ১৫ থেকে ২০ জন এই চক্রের হয়ে কাজ করেন। তিন–চার মাস ধরে নানা অপরাধ সংঘটিত করেছে এই চক্র। নিজেদের র‌্যাব হিসেবে উপস্থাপন করতে র‌্যাব জ্যাকেট, হাতকড়া, ওয়াকিটকি ইত্যাদি ব্যবহার করতেন সদস্যরা।

র‌্যাব জানায়, চক্রটি নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাংকের গ্রাহকদের অপহরণ ও অর্থ ছিনিয়ে নিত। সাধারণত, দলের এক–দুজন সাধারণ ছদ্মবেশে ব্যাংকের বাইরে, দুই–তিনজন গ্রাহকের ছদ্মবেশে ব্যাংকের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতেন।

মূল দলটি মাইক্রোবাস নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে অপেক্ষা করত। এরপর তাঁরা সুবিধাজনক গ্রাহক শনাক্ত করেন। যে গ্রাহক বেশি টাকা উত্তোলন করেন, কিন্তু নিজস্ব গাড়ি নেই, তাঁদেরই সাধারণত টার্গেট করতেন তাঁরা। ভেতরের একজন ব্যাংক থেকে বের হয়ে এসে বাইরের জনকে টার্গেট বুঝিয়ে দিতেন। এরপর মাইক্রোবাসটি সুবিধাজনক স্থানে গতিরোধ করে ওই ব্যক্তিকে তুলে নিত। গাড়ির ভেতরে চোখমুখ বেঁধে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে চলে যেত।

আটক ব্যক্তিরা যেসব অপরাধ করেছেন
গত সেপ্টেম্বরে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তিন লাখ টাকা ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এই চক্র।

গত অক্টোবরে আশুলিয়ায় সাভার ইপিজেড এলাকা থেকে দুই লাখ টাকা, কুমিল্লার চান্দিনা কাঁচাবাজার থেকে একজনকে অপহরণ করে এক লাখ টাকা, কেরানীগঞ্জ থানাধীন আঁটিপাড়া বাজার থেকে সাত লাখ টাকা, নরসিংদীর শিবপুর বাজার এলাকা থেকে ১০ হাজার টাকা, মাদারীপুরের শিবচর বাজার এলাকা থেকে দুই লাখ টাকা, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার শিবালয় থানা এলাকা থেকে এক লাখ টাকা, টাঙ্গাইল মির্জাপুর থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে তিন লাখ টাকা, সিরাজগঞ্জ জেলার নিমতলাবাজার জোড়া ব্রিজ এলাকা থেকে দুই লাখ টাকা, গাজীপুরের টঙ্গী থেকে দুই লাখ টাকা, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়ারবাজার থেকে তিন লাখ টাকা, কুমিল্লার চান্দিনা থানাধীন সেনানিবাস এলাকা থেকে তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

সূত্র : প্রথম আলো।