চাঁদপুর শহরে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দারিদ্র্য বিমোচনে চাহিদা অনুযায়ী কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হবে
চাঁদপুর পৌরসভার আওতাভুক্ত ১৫টি ওয়ার্ডে আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত জরিপকৃত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচনের জন্যে যতো কোটি টাকা ব্যয়ের চাহিদা সৃষ্টি হবে, ঠিক ততো কোটি টাকা ব্যয় করা হবে বলে ইউএনডিপি কর্মকর্তা আঃ কাইউম বলেছেন। তিনি গতকাল সোমবার চাঁদপুর পৌর পাঠাগারে টিএলসিসি সভায় এমন কথা বলেন। তিনি জাতীয় নগর দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প (এনইউপিআরপি) সম্পর্কে ব্রিফিংকালে বলেন, বাংলাদেশের ৬টি পৌরসভা ও ৬টি সিটি কর্পোরেশনে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যে গত ১৪ আগস্ট ৮শ’ ২৬ কোটি ১২ লাখ টাকার বিষয়টি একনেকে অনুমোদন লাভ করেছে। জানা যায়, এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন করা হবে ১শ’ ২৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা আর প্রকল্প সাহায্য আসবে ৬শ’ ৯৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
জনাব আঃ কাইউম জানান, চাঁদপুর পৌরসভার ১৫টি আওয়ার্ডে ৭৫টি প্রশ্নে নিবিড় জরিপের মাধ্যমে ২৩ হাজার দরিদ্র পরিবার চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের দারিদ্র্য বিমোচনে সকল কাজ কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট গ্রুপ (সিডিসি)-এর মাধ্যমে করা হবে, কোনো ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে না। তবে এ কাজের তত্ত্বাবধানে থাকবে পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরসহ কর্মকর্তাগণ। তিনি জানান, এনইউপিআরপি প্রকল্পে যতো কাজ হবে, পুরোটাই অনুদানের অর্থে হবে, যা ফেরৎযোগ্য নয়। দরিদ্র পরিবারের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ১ম থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অনুদান প্রদান, ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সীদের জন্যে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, বয়স্ক নারীদের ব্যবসা অনুদান, স্বাস্থ্যসেবাসহ দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা প্রদান করা হবে। এর বাইরে এই দরিদ্র পরিবারগুলোকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সুবিধা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে থাকবে বহুতল আবাসিক ভবন, তাদের চলাচলের সড়কসমূহ ফুটপাতসহ পাকাকরণ, তাদের পয়ঃনিষ্কাশনে ড্রেন নির্মাণ, প্রধান সড়কে যাতায়াতের জন্যে লিংক রোড নির্মাণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা নির্মাণ ইত্যাদি।
এক প্রশ্নের জবাবে আঃ কাইউম বলেন, চাঁদপুর পৌরসভার জন্যে বা অন্য পৌরসভা/সিটি কর্পোারেশনের জন্যে ঠিক কতো কোটি টাকা নির্দিষ্টভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে, সেটা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে ৮ শতাধিক কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় থেকে জরিপের ভিত্তিতে চাহিদা অনুযায়ী ৬টি পৌরসভা ও ৬টি সিটি কর্পোরেশনে অর্থ ব্যয় করা হবে। এটা চাঁদপুর পৌরসভার জন্যে ৫ কোটি, ১০ কোটি কিংবা ৫০ কোটি টাকা কিংবা তারও অধিক হতে পারে।
টুকিটাকি
বৃহস্পতিবার ফুটবলারদের সংবর্ধনা
বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চাঁদপুর পৌরসভা জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় পৌর পাঠাগারে খেলোয়াড়, কোচ ও সংগঠকসহ সংশ্লিষ্টদের সংবর্ধনা দেয়া হবে। গতকাল টিএলসিসি সভায় পৌর সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া এ তথ্য জানান।
১০০ টাকার চেক ভাল্ব না লাগালে
পানির সংযোগ কর্তন
গতকাল চাঁদপুর পৌরসভার টিএলসিসি সভায় মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ জানান, পানির অপচয় রোধে গ্রাহকদের অন্তত ১০০ টাকার চেক ভাল্ব লাগাতে হবে। এজন্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে এবং মাইকিং করা হয়েছে। এটি না লাগালে পানির সংযোগ কর্তন করা হবে।
জন্মনিবন্ধনে অতিরিক্ত ফি নেয়া হবে না
সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদপুর পৌরসভার রাজস্ব বৃদ্ধির স্বার্থে জন্মনিবন্ধনে অতিরিক্ত ফি নেয়ার অভিযোগ গতকালকের টিএলসিসি সভায় উত্থাপিত হলে মেয়র বলেন, সরকারি গেজেটের বাইরে এক টাকাও আর নেয়া হবে না।
পৌর অডিটোরিয়াম ও জোড়পুকুর পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধন হবে
গতকাল চাঁদপুর পৌরসভার টিএলসিসি সভায় মেয়র বলেন, এ অর্থবছরেই বিএমডিএফ-এর সহযোগিতায় চাঁদপুর পৌর অডিটোরিয়ামে সাউন্ড সিস্টেম ও ইনার ডেকোরেশনে ৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। আর বর্ষা শেষে অগ্রহায়ণে পানি সেঁচে জোড় পুকুরের চার পাড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণের কাজ করা হবে।
‘জীবন বাবু’
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাক ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধির নাম গোলাম কিবরিয়া জীবন। তাঁকে প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কামরুজ্জামান চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম) রসিকতা করে টিএলসিসির সভাসহ বিভিন্ন স্থানে ‘জীবন বাবু’ বলে ডাকতেন। চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রও তাঁকে এ নামেই ডাকেন। এতে তিনি বিব্রতবোধ করলেও মেয়র নাছোড়বান্দা। গতকাল তাঁর উপস্থিতিতে ও অনুপস্থিতিতে মেয়র তাঁর বক্তৃতায় তাঁকে ‘জীবন বাবু’ই বলতে দেখা গেছে। প্রতিটি টিএলসিসি সভাতেই এ চিত্র কমন হয়ে গেছে।
সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ