বাস-মাইক্রো সংঘর্ষে একই পরিবারের তিনজনসহ নিহত ৭, বর-কনেসহ আহত ১০
মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল মালোপাড়ার কৃঞ্চ বর্মনের ছেলে রাজিব বর্মন রাজু (২৫) নরসিংদী থেকে বিয়ে করে বৌ নিয়ে ফেরাত পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিবপুরে সোনাইমুড়ি ইটাখোলা নামক স্থানে যাত্রীবাহী বাসের সাথে তাদের মাইক্রেবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জনসহ ৭ জন নিহত হবার খবর পাওয়া যায়। আহত হয় অন্তত ১৭ জন। এর মধ্যে বর-কনে দুজনই বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে আছে বলে জানান ষাটনল মালোপাড়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য ফুলচান বর্মন।
দুর্ঘটনায় নিহত-চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ষাটনল মালো পাড়া এলাকার সুজন বর্মন (৩২), তার স্ত্রী ভুলুরানী মিতু (২৬) তাদের মেয়ে স্নিগ্ধা বর্মন (৭)। এরা বরের বোন, বোনের জামাই ও ভাগ্নিœ।
এছাড়াও নিহত হয় আড়াইহাজারের ধুুপতারা এলাকার নির্মল বর্মনের মেয়ে বৃষ্টি বর্মন (৬) এবং নরসিংদীর নবোয়ারচর এলাকার সুবল বর্মনের মেয়ে প্রান্তিকা বর্মন (৫)। বাকি ২জনের ঠিকানা এখনো জানা যায়নি।
দুর্ঘটনায় আহত বর রাজিব বর্মন রাজু (২৫) ও কনে রমা বর্মনসহ (২০) অন্তত১৭ জন। তারা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী । আহত বাকিরা হলো : চাঁদপুরের মতলব উত্তরের নিলতা বর্মণ (৩০), অনিক চন্দ্র বর্মন (১৫), বিক্রম চন্দ্র বর্মন (৪২), সজল (৩০), শুভ বর্মন (২৫), রাজিব বর্মন (২৫), নরসিংদীর রায়পুরার আমজাদ (৩৫), রুমা বর্মন (২৩), সোমা বর্মন (২৫), সায়ন্তিকা (৫), ডেমরার দেলোয়ার হোসেন (২৪), আড়াইহাজারের সৌরভ বর্মন (১০), জামান (৩২), মুন্সীগঞ্জের সোহাগ (২৮) এবং কিশোরগঞ্জের জমশেদ (৩৫)। আহতদের প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা।
নিহতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল মালোপাড়া এলাকার রাজিব বর্মন রাজুর সাথে নরসিংদীর মরজাল ইউনিয়নের নভোয়ারচর এলাকার রুমা বর্মনের বিয়ে হয়। বর যাত্রীর ৪টি মাইক্রোবাসের মধ্যে বর-কনের বাসটিই দুর্ঘটনার শিকার হয়।
একেই বলে নিয়তি। বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। পুরো বাড়ি বিভিন্ন সাজে সজ্জিত। দেখলে বুঝাই যায় যে এটি একটি বিয়ে বাড়ি। কিন্তু বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও বৌ-ভাত যে আর হচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনায় বর-কনে এখন হাসপাতালের আইসিইউতে। বাড়িতে বরের বৃদ্ধা মা’কে বাকরুদ্ধ অবস্থায় বসে থাকতে দেখা গেছে, তিনি কোন কথা বলতে পাড়ছে না।
এ নিউজ লেখা পর্যন্ত বরের বোন ভুলুরানী মিতুর লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছলে স্বজনদের কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। মিতুর স্বামী সুজন বর্মন ও তাদের কন্যার লাশ কাছাকাছি এসে পোঁছে বলে জানায় স্থানীয় মৎস্য প্রতিনিধি ইমাম হোসেন।