আমার মা ছিলেন আসল গেরিলা : প্রধানমন্ত্রী
আমার মা এমন গেরিলা ছিলেন, পাকিস্তানিরা কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি। এমনকি কোনো রিপোর্ট লিখতে পারে নাই তার নামে। তিনি ছিলেন আসল গেরিলা।
আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেগম ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেবেকা মোমেন এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিকভাবে আমার মা যে কত দৃঢ় চিত্তের ছিলেন, তিনি রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য কাজ করে গেছেন। বাব যখন ৬ দফা দাবি পেশ করলেন তার পর তাকে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হলো।
তিনি বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে পাহারা দেয়ার জন্য তখন আইবি ছিল, ‘আমার মা তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আজিমপুর কলোনীতে গিয়ে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতেন। তখন আমার আব্বা কারাগারে বসে যে নির্দেশনাগুলো দিতেন, যে স্লোগানগুলো দিতেন মা ছাত্র নেতাদের কাছে তা পৌঁছে দিতেন। কিন্তু সেই সময় ইন্টিলিজেন্সের লোকরা এ খবরটা জানতে পারেননি। এর আরেকটা প্রমাণ পেয়েছি এসবি কাছে রিপোর্ট দেখতে গিয়ে দেখলাম আমার আব্বার বিরুদ্ধে ৪৭ ফাইল। আমার মা যে গেরিলার বেশে এমন করে যেতেন, এ নির্দেশনাগুলো দিতেন ওই রিপোর্টগুলোতে আমি খুঁজে পাইনি।
শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশের স্বাধীনতায় আমার মায়ের অবদান অনেক। আমার মা ছিলেন আসল গেরিলা। তিনি আন্দোলনটাকে গড়ে তুলেছেন। আন্দোলন কিভাবে করতে হবে এটা আমার মায়ের কাছ থেকে শেখা।
তিনি বলেন, আমার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা খুব জ্ঞানপিপাসু ছিলেন। লেখাপড়ার তেমন সুযোগ না পেলেও চিন্তা ভাবনায় তিনি খুব উচ্চমানের ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পারিবারিক ও মানুষকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে যেমন ছিলেন উদারমনের দেশের স্বার্থে তেমন কঠোর ছিলেন বঙ্গমাতা। তিনি আরও বলেন, তার কঠোর মনোবল ও দৃঢ়তাই দেশকে স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছে।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতা হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনিও শাহাদাতবরণ করেন।