• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

জাতীয় অধ্যাপক হলেন চাঁদপুরের কৃতী সন্তান প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলাম

প্রকাশ:  ২১ জুন ২০১৮, ০৮:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 সরকার চাঁদপুরের দুই কৃতী সন্তানকে পুলিশপ্রধান ও সেনাপ্রধান করার পর এবার চাঁদপুরের আরেক কৃতী সন্তান প্রফেসর ড. রফিকুল ইসলামকে দিয়েছেন জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা। তাঁকেসহ দেশের আরো বরেণ্য ব্যক্তিত্বকে জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগ করেছে সরকার। তাঁরা তিনজন হলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের এমিরেটাস অধ্যাপক ও উপদেষ্টা ড. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) উপাচার্য ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী।
    মঙ্গলবার (১৯ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নিয়োগ পাওয়া জাতীয় অধ্যাপকরা ১৯৮১ সালের সিদ্ধান্ত বিধিমালা অনুযায়ী নিযুক্ত পদের বিপরীতে দায়িত্ব পালন করবেন এবং সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
    ইতিপূর্বে অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেছে নির্বাচনী কমিটি। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়।
    সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩ জুন সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে নির্বাচনী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আখতারুজ্জামান।
    বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৯ জন অধ্যাপকের একটি তালিকা প্রস্তাব আকারে উপস্থাপন করা হয়। এঁরা হলেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, ড. অনুপম সেন, ডাঃ একে আজাদ খান, ড. একে আজাদ চৌধুরী, ডাঃ দীন মোহাম্মদ, ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত, ড. রফিকুল ইসলাম ও বুয়েটের প্রাক্তন ভিসি অধ্যাপক ড. এম. এইচ. খান। বৈঠকে নির্বাচন কমিটি অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ও ড. রফিকুল ইসলামের নাম সুপারিশ আকারে পাঠায় অনুমোদনের জন্যে।
    বৈঠকে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন প্রস্তাব উপস্থাপন করে জানান, সর্বশেষ ২০১১ সালের জুন মাসে পাঁচজন শিক্ষাবিদকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের জুনে। এসব অধ্যাপকদের মধ্যে ড. শায়লা খাতুন ছাড়া সবাই মারা গেছেন।
    জাতীয় অধ্যাপক বাংলাদেশের বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, যা বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণার জন্যে দেশের বিশিষ্ট প-িত, চিন্তাবিদ ও শিক্ষকদের দেয়া হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে এই সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। সাধারণত পাঁচ বছর মেয়াদের জন্যে কোনও বিশিষ্ট ব্যক্তি জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্তি পেয়ে থাকেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে মেয়াদ আরও দীর্ঘ হতে পারে। নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয় অধ্যাপক পুনর্নিয়োগের ব্যবস্থাও রয়েছে।
    জাতীয় অধ্যাপকদের কিছু শর্ত মানতে হয়। শর্তগুলো হলো জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে তারা সরকারের দেয়া নির্ধারিত হারে সম্মানী ভাতা পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে তারা এ ভাতা পাবেন। তারা ইচ্ছানুযায়ী কোনও গবেষণা সংস্থা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে নিজের পছন্দমতো ক্ষেত্রে গবেষণামূলক কাজ করতে পারবেন। তবে যে ক্ষেত্রে কাজ করবেন তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে জানাতে হবে। তারা যে শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত থাকবেন সে প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের শিক্ষা বা গবেষণামূলক কাজের বার্ষিক প্রতিবেদন দেবেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানকে তাদের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাবে। তারা যে শিক্ষা বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকবেন সেই প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা বা গবেষণামূলক কাজ করার সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ পদে থাকাকালীন তাদের যেসব বইপুস্তক ছাপানো হবে, তা থেকে পাওয়া সব সুযোগ-সুবিধা তারা নিতে পারবেন। এ পদে থাকাকালীন তারা সরকারের অনুমতি নিয়ে বিদেশে যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করতে পারবেন। জাতীয় অধ্যাপক পদে থাকাকালীন তারা অন্য কোনও বেতনভুক্ত চাকরি করতে পারবেন না। যদি করেনও, তবে ওই চাকরি থেকে কোনও বেতন বা আর্থিক সুবিধা নিতে পারবেন না। তবে তারা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন না।
    
রফিকুল ইসলামের জীবনবৃত্তান্ত
    রফিকুল ইসলাম (জন্ম : ১ জানুয়ারী ১৯৩৪) একজন বাংলাদেশি লেখক এবং দেশের প্রথম নজরুল গবেষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও অত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নজরুল-গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক  এবং বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

    জন্ম : রফিকুল ইসলাম ১৯৩৪ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

    শিক্ষাজীবন : অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেখাপড়া করেন। ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন ও গবেষণা সম্পাদনা করেন আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে।

    কর্মজীবন : ১৯৫৮ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও নজরুল গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বন্দীশিবিরে নির্যাতিত হন। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃিত, ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তাঁর বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা রয়েছে।

    তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ : নজরুল নির্দেশিকা, ভাষাতত্ত্ব, অহ ওহঃৎড়ফঁপঃরড়হ ঃড় ঈড়ষষড়য়ঁরধষ ইবহমধষর, নজরুল জীবনী, বীরের এই রক্তস্রোত মাতার এ অশ্রুুধারা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ঢাকার কথা, ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনার, কাজী নজরুল ইসলাম : জীবন ও কবিতা, কাজী নজরুল ইসলাম : জীবন ও সাহিত্য, কাজী নজরুল ইসলামের গীতি সাহিত্য, শহীদ মিনার, আবদুল কাদির, বাংলা ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের সাহিত্যে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ, ভাষাতাত্ত্বিক প্রবন্ধাবলি, আবুল মনসুর আহমেদ রচনাবলি, বাংলা ব্যাকরণ সমীক্ষা, নজরুল প্রসঙ্গে, অমর একুশে ও শহীদ মিনার, কাজী নজরুল ইসলাম : জীবন ও সৃষ্টি, কিশোর কবি নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর (২০০৩) ও হাজার বছরের বাংলা সাহিত্য।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জীবনবৃত্তান্ত
    অধ্যাপক আনিসুজ্জামান (জন্ম : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭) হলেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ ও লেখক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক। তিনি প্রত্যক্ষভাবে ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নিয়ে তাঁর গবেষণা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি একজন ইমেরিটাস অধ্যাপক।

    জন্ম : আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম এটিএম মোয়াজ্জেম। তিনি ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন গৃহিণী হলেও লেখালেখির অভ্যাস ছিলো। পিতামহ শেখ আবদুর রহিম ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক। আনিসুজ্জামানরা ছিলেন পাঁচ ভাই-বোন। তিন বোনের ছোট আনিসুজ্জামান, তারপর আরেকটি ভাই। বড় বোনও নিয়মিত কবিতা লিখতেন। বলা যায়, শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসমৃদ্ধ ছিল তাঁদের পরিবার।

    শিক্ষাজীবন : কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে শিক্ষাজীবনের শুরু করেন আনিসুজ্জামান। ওখানে পড়েছেন তৃতীয় শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। পরে এদেশে চলে আসার পর অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন খুলনা জেলা স্কুলে। কিন্তু বেশিদিন এখানে পড়া হয়নি। একবছর পরই পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় ভর্তি হন প্রিয়নাথ হাইস্কুলে। আনিসুজ্জামান ছিলেন প্রিয়নাথ স্কুলের শেষ ব্যাচ। কারণ তাঁদের ব্যাচের পরেই ওই স্কুলটি সরকারি হয়ে যায় এবং এর নাম-পরিবর্তন করে রাখা হয় নবাবপুর গভর্নমেন্ট হাইস্কুল। সেখান থেকে ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা বা ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে। জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে আইএ পাস করে বাংলায় অনার্স নিয়ে বিএ ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি অনার্স পাস করলেন এবং ১৯৫৭ -এ এমএ পাস করার পরের বছর অর্থাৎ ১৯৫৮ -এ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমির প্রথম গবেষণা বৃত্তি পেলেন। কিন্তু একবছর যেতে না যেতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক শূন্যতায় বাংলা একাডেমির বৃত্তি ছেড়ে দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে। সে সময়ে বিভাগীয় প্রধান ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন শহীদ মুনীর চৌধুরীকে। ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে স্নাতক সম্মান এবং এমএতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। অনার্সে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার কৃতিত্বস্বরূপ ‘নীলকান্ত সরকার’ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ড. আনিসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার জন্যে যোগদান করেন। বিষয় ছিল ‘ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা ১৭৫৭-১৯১৮’। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। গবেষণার বিষয় ছিল ‘উনিশ শতকের বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস : ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল’

    কর্মজীবন : আনিসুজ্জামান ছিলেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। বাংলা একাডেমির বৃত্তি ছেড়ে দিয়ে আনিসুজ্জামান যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেন তখন তাঁর বয়স মাত্র ২২ বছর। প্রথমে অ্যাডহক ভিত্তিতে চাকরি হলো তিন মাসের। কথা ছিল গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হলেই চাকরি শেষ হয়ে যাবে। চাকরি চলে যাওয়ার পর কয়েক মাস বেকার থাকলেন। তারপর পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের গবেষণা বৃত্তি পেলেন। এর কয়েক মাস পর অক্টোবর মাসে আবার যোগ দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায়। ১৯৬২ সালে তাঁর পিএইচডি হয়ে গেল। তাঁর পিএইচডির অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল 'ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা (১৭৫৭-১৯১৮)। ১৯৬৪ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন ডক্টরাল ফেলো হিসেবে বৃত্তি পেয়ে। ১৯৬৯ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই অবস্থান করেছিলেন। পরে ভারতে গিয়ে প্রথমে শরণার্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি'র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তারপর বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৪-৭৫সালে কমনওয়েলথ অ্যাকাডেমি স্টাফ ফেলো হিসেবে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে গবেষণা করেন। জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-প্রকল্পে অংশ নেন ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে। পরে সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে আবার যুক্ত হন। তিনি মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজ (কলকাতা), প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ ক্যারোলাইনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। এছাড়াও তিনি নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি শিল্পকলাবিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা যামিনী এবং বাংলা মাসিকপত্র কালি ও কলম-এর সম্পাদকম-লীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে তাঁর পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। মুজিবনগরে তিনি তাজউদ্দীনের বিচক্ষণ কর্মকা- সরেজমিনে কাছ থেকে দেখেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মহান ভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্র উচ্ছেদবিরোধী আন্দোলন, রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী আন্দোলন এবং ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলনে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।

প্রকাশিত গ্রন্থাবলি : গবেষণা গ্রন্থ-মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য (১৯৬৪), মুসলিম বাংলার সাময়িকপত্র (১৯৬৯), মুনীর চৌধুরী (১৯৭৫), স্বরূপের সন্ধানে (১৯৭৬), ঝড়পরধষ অংঢ়বপঃং ড়ভ ঊহফড়মবহড়ঁং ওহঃবষষবপঃঁধষ ঈৎবধঃরারঃু (১৯৭৯), ঋধপঃড়ৎু ঈড়ৎৎবংঢ়ড়হফবহপব ধহফ ড়ঃযবৎ ইবহমধষর উড়পঁসবহঃং রহ ঃযব ওহফরধ ঙভভরপরধষ খরনৎধৎু ধহফ জবপড়ৎফং (১৯৮১), আঠারো শতকের বাংলা চিঠি (১৯৮৩), মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (১৯৮৩), পুরোনো বাংলা গদ্য (১৯৮৪), মোতাহার হোসেন চৌধুরী (১৯৮৮), ঈৎবধঃরারঃু, জবধষরঃু ধহফ ওফবহঃরঃু (১৯৯৩), ঈঁষঃঁৎধষ চষঁৎধষরংস (১৯৯৩), ওফবহঃরঃু, জবষরমরড়হ ধহফ জবপবহঃ ঐরংঃড়ৎু (১৯৯৫), আমার একাত্তর (১৯৯৭), মুক্তিযুদ্ধ এবং তারপর (১৯৯৮), আমার চোখে (১৯৯৯), বাঙালি নারী, সাহিত্যে ও সমাজে (২০০০), পূর্বগামী (২০০১), কাল নিরবধি (২০০৩), বিদেশি সাহিত্য অনুবাদ, অস্কার ওয়াইল্ডের অহ ওফবধষ ঐঁংনধহফ এর বাংলা নাট্যরূপ ‘আদর্শ স্বামী’ (১৯৮২), আলেক্সেই আর বুঝুভের অহ ঙষফ ডড়ৎষফ ঈড়সবফু -র বাংলা নাট্যরূপ ‘পুরনো পালা’ (১৯৮৮); গ্রন্থ একক ও যৌথ সম্পাদনা-রবীন্দ্রনাথ (১৯৬৮), বিদ্যাসাগর-রচনা সংগ্রহ (যৌথ, ১৯৬৮), ঈঁষঃঁৎব ধহফ ঞযড়ঁমযঃ (যৌথ, ১৯৮৩), মুনীর চৌধুরী রচনাবলি ১-৪ খ- (১৯৮২-১৯৮৬), বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খ- (যৌথ, ১৯৮৭), অজিত গুহ স্মারকগ্রন্থ (১৯৯০), স্মৃতিপটে সিরাজুদ্দীন হোসেন (১৯৯২), শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ (১৯৯৩), নজরুল রচনাবলি ১-৪ খ- (যৌথ, ১৯৯৩), ঝঅঅজঈ : অ চবড়ঢ়ষব'ং চবৎংঢ়বপঃরাব (১৯৯৩), শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের আত্মকথা (১৯৯৫), মুহম্মদ শহীদুল্লাহ রচনাবলি (১ ও ৩ খ-, ১৯৯৪-১৯৯৫), নারীর কথা (যৌথ, ১৯৯৪), ফতোয়া (যৌথ, ১৯৯৭), মধুদা (যৌথ, ১৯৯৭), আবু হেনা মোস্তফা কামাল রচনাবলি (১ম খ-, যৌথ ২০০১), ওগুস্তে ওসাঁর বাংলা-ফরাসি শব্দসংগ্রহ (যৌথ ২০০৩), আইন-শব্দকোষ (যৌথ, ২০০৬)।

    পুরস্কার ও সম্মাননা : ১৯৫৬ : নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ১৯৬৫ : দাউদ পুরস্কার; ১৯৭০ : প্রবন্ধ-গবেষণায় অবদানের জন্যে বাংলা একাডেমি থেকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার; ১৯৮৫ : শিক্ষায় অবদানের জন্যে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক; ১৯৯৩: আনন্দবাজার পত্রিকা কর্তৃক প্রদত্ত আনন্দ পুরস্কার; ২০০৫: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি লিট. ডিগ্রি; এশিয়াটিক সোসাইটিতে (কলকাতা) ইন্দিরাগান্ধী স্মারক বক্তৃতা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শরৎচন্দ্র স্মারক বক্তৃতা, নেতাজী ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সে নেতাজী স্মারক বক্তৃতা, অণুষ্টুপের উদ্যোগে সমর সেন স্মারক বক্তৃতা প্রদান। ২০১৪ : শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্যে ভারত সরকার প্রদত্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ পদক, ২০১৫ : সাহিত্যে অবদানের জন্যে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০১৭ : বিপুলা পৃথিবী বইয়ের জন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা কর্তৃক প্রদত্ত আনন্দ পুরস্কার
    ২০১৮ : বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিণী পদক।

জামিলুর রেজা চৌধুরীর জীবনবৃত্তান্ত
    অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী (জন্ম : ১৫ নভেম্বর ১৯৪২) বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা। তিনি বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য পদে কর্মরত। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

    জন্ম ও শিক্ষাজীবন : ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ১৯৪২ সালের ১৫ নভেম্বর সিলেট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী এবং মা হায়াতুন নেছা চৌধুরী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তাঁর অবস্থান তৃতীয়। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর শৈশবকাল বিচিত্র অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর শৈশবকাল কেটেছে। তিন বছর বয়সে সিলেট ছেড়ে পরিবারের সঙ্গে চলে যান আসামের জোড়হাটে। ১৯৪৭ সালের আগস্টে আবার সিলেটে ফিরে আসেন। এরপর তাঁর বাবা বদলি হয়ে ময়মনসিংহে চলে যান। সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে তিনি ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্যে তিনি ভর্তি হন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)। ১৯৬৩ সালে তিনি প্রথম বিভাগে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন।

    কর্মজীবন : বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ফলাফল প্রকাশের কয়েকদিন পর নিয়োগপত্র ছাড়াই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন তিনি। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালের নভেম্বর মাসে তিনি প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন পুরকৌশল বিভাগে। এভাবেই তাঁর শিক্ষকতা জীবন শুরু হল। ১৯৬৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বার্মাশেল বৃত্তি নিয়ে চলে যান ইংল্যান্ডে। এই বৃত্তি বছরে একটাই দেয়া হতো। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএসসি করেন, অ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। থিসিসের বিষয় ছিল, কংক্রিট বিমে ফাটল। ১৯৬৮ সালে তিনি কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন অব হাইরাইজ বিল্ডিং বিষয়ের উপর পিএইচডি করেন। পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরে তিনি বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এরপর ১৯৭৩ সালে সহযোগী অধ্যাপক ও ১৯৭৬ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০১ সাল পর্যন্ত বুয়েটে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর মধ্যে কখনো বিভাগীয় প্রধান ছিলেন, ডিন ছিলেন। বুয়েটের কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক ছিলেন প্রায় ১০ বছর। ১৯৭৯ সালে ব্যাংককে টঘঊঝঈঅচ-এ কয়েক মাস পরামর্শক হিসেবে ছিলেন। ১৯৭৪-১৯৭৫ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং এসোসিয়েট প্রফেসর ছিলেন। ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিআইটির গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত। তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন যুক্তরাজ্যের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ফেলো। যুক্তরাজ্যের একজন চার্টার্ড ইঞ্জিনিয়ার, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির ফেলো। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটি এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা), বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক চৌধুরী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সফটওয়্যার রফতানি এবং আইটি সার্ভিস রপ্তানী-সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৯৭ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি টাস্কফোর্সের একজন সদস্য। এছাড়া তিনি আরো অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও জড়িত। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য হিসেবে কর্মরত।

    পুরস্কার ও সম্মাননা : একুশে পদক (২০১৭ ), শেলটেক পুরস্কার (২০১০), বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন স্বর্ণপদক (১৯৯৮), ড. রশিদ স্বর্ণপদক (১৯৯৭), রোটারি সিড অ্যাওয়ার্ড (২০০০), লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল (ডিস্ট্রিক-৩১৫) স্বর্ণপদক, ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি, যিনি একটি ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ের ওপর এ ধরনের ডিগ্রি পেয়েছেন। এছাড়া পেয়েছেন জাইকা রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড।