• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

খুন হলেন কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী অধ্যক্ষ ফেন্সি ॥ স্বামী অ্যাডঃ জহিরুল ইসলাম আটক

প্রকাশ:  ০৫ জুন ২০১৮, ২২:০৬ | আপডেট : ০৫ জুন ২০১৮, ২২:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ জহিরুল ইসলামের স্ত্রী খুন হয়েছেন। তার স্ত্রী ফরিদগঞ্জের গল্লাক কলেজের অধ্যক্ষ শাহিন সুলতানা ফেন্সি গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর কোনো এক সময় নিজ বাসার ভেতরে খুন হন। চাঁদপুর শহরের ষোলঘর এলাকায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বিপরীত পাশে শেখ বাড়ি রোডে অবস্থিত নিজের চারতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে যে, বেড রুমের ভেতরে খাটের পাশে মেঝেতে অধ্যক্ষ শাহিন সুলতানা ফেন্সির রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। আর লাশের আশপাশে ছোপ ছোপ রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
    অ্যাডঃ জহিরুল ইসলামের সহকর্মী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ আহছান হাবীব জানান, অ্যাডঃ জহির গতকাল এশা এবং তারাবীহের নামাজ জামাতে ষোলঘরস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মসজিদে আদায় করেন। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে অ্যাডঃ আহছান হাবীবসহ অন্য মুসল্লিরা শুনতে পান, অ্যাডঃ জহিরুল ইসলামের স্ত্রী খুন হয়েছেন। এমন খবর শুনে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
    এদিকে অ্যাডঃ জহিরের ছোট ভাই নয়নের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, তার ভাই মসজিদ থেকে নামাজ শেষ করে বাসায় গিয়ে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকে দেখেন তার স্ত্রীর লাশ ফ্লোরে পড়ে আছে। তখনই অ্যাডঃ জহির তার ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন এবং থানাকে ফোন দেন। নয়ন জানান, রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে তাকে তার ভাই ফোন দিয়ে ভাবী খুন হওয়ার ঘটনা জানান।
    মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্লাহ অলির সাথে ঘটনাস্থলে কথা হলে তিনি জানান, রাত সাড়ে ১০টার পর খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। এরপর খুনের ঘটনা দেখতে পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। তখন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোঃ মিজানুর রহমান এবং আরো বেশ ক’জন পুলিশ ইন্সপেক্টর, পিবিআই ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পর্কে ওসি জানান, লাশের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথার মাঝামাঝি স্থানে প্রচ- আঘাত রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই অ্যাডঃ জহিরকে আটক করে।
    এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে নিহত অধ্যক্ষ ফেন্সির আত্মীয়-স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। নিহতের বড় ভাই ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নঈমুদ্দিন খান ঘটনাস্থলে এ প্রতিবেদককে বলেন, তার ভগ্নিপতি অ্যাডঃ জহির দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন। প্রথম স্ত্রী হচ্ছেন তার বোন ফেন্সি। তার বোনের সংসারে তিন মেয়ে রয়েছে। তাদের তিনজনেরই বিবাহ হয়েছে। দুই মেয়ে দেশের বাইরে থাকেন। অ্যাডঃ জহিরের দ্বিতীয় বিবাহ করা নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। তিনিসহ অন্য ভাই-বোনরা জোর দিয়ে বলেন, অ্যাডঃ জহিরই তার স্ত্রীকে খুন করেছে।
    অ্যাডঃ জহির দ্বিতীয় বিবাহ করেন প্রায় বছর পাঁচেক আগে। দ্বিতীয় স্ত্রীর গ্রামের বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলায়। তার নাম জুলেখা বেগম। থাকেন চাঁদপুর শহরের নাজিরপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায়। এ সংসারে অ্যাডঃ জহিরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তার প্রথম স্ত্রী শাহিন সুলতানা ফেন্সির পৈত্রিক বাড়ি চাঁদপুর পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডস্থ বাহের খলিশাডুলি গ্রামে। তিনি চাঁদপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন সভানেত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য। খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালসহ অনেক নেতা ও আইনজীবী ঘটনাস্থলে যান এবং রাত ১টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন। রাত দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের লাশ ঘটনাস্থলেই ছিলো। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সেক্টরের সদস্যরা ওই সময় পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই ছিলেন।