প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদনে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার বিষয়ে জিও (গভর্নমেন্ট অর্ডার) জারির ফাইলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাক্ষর করেছেন। বুধবার রাত সাড়ে আটটায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক।
তিনি জানান, ‘রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছেন। সই হয়ে গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জিও জারি হবে।’
এর ফলে আগামীকাল জিও হাতে পাওয়ার পর যে কোনও সময়ে অস্ট্রেলিয়া রওনা হতে পারেন প্রধান বিচারপতি, যদিও ১৩ অক্টোবর রওনা হওয়ার কথা জানিয়ে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।
এর আগে বুধবার দুপুরে প্রধান বিচারপতির জিও ফাইলে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সচিবালয়ে সে তথ্য নিশ্চিত করে আইনমন্ত্রী তখন জানান, কিশোরগঞ্জ সফর শেষে বঙ্গভবনে ফেরার পর রাষ্ট্রপতি ফাইলটিতে স্বাক্ষর করবেন।
উল্লেখ্য, ২৫ দিনের অবকাশ শেষে ৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট খোলার দিনই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ১ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসের ছুটিতে যান সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এ নিয়ে রাজনৈতিকমহল ও আইনজীবীদের মধ্যে আলোচনার ঝড় ওঠে। এর আগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় এবং বিচারিক আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি সংক্রান্ত গেজেট নিয়ে সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় প্রধান বিচারপতিকে জোর করে ছুটিতে পাঠানোর অভিযোগ তোলেন বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদসহ আইনজীবী সমিতির একাংশ। তবে সরকার ও আওয়ামী লীগ এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। প্রধান বিচারপতি বা আদালতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই প্রধান বিচারপতি সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পাঁচ বছরের ভিসার জন্য দূতাবাসে আবেদন করেন। দেশটিতে বর্তমানে তাদের বড় মেয়ে সূচনা সিনহা অবস্থান করছেন। তাদের তিন বছরের ভিসা দেয় অস্ট্রেলিয়া দূতাবাস। এরপর মঙ্গলবার তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে তার বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। ওই চিঠিতে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে চান বলে উল্লেখ রয়েছে। তার এই চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছানোর পরই জিও দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারিতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এস কে সিনহার আগামী ৩১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা।