১৩ অক্টোবর যেতে চান প্রধান বিচারপতি
এ সপ্তাহেই বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক জানান, মঙ্গলবার বিকালে প্রধান বিচারপতির ওই চিঠি মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়। প্রধান বিচারপতি বিদেশে যাবেন এটা রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করতে আমাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। এটি এখন প্রক্রিয়াধীন।
চিঠির বরাত দিয়ে আইন সচিব বলেন, আগামী ১৩ তারিখ তিনি (প্রধান বিচারপতি) বিদেশে যাবেন, ফিরবেন ১০ নভেম্বর।
তিনি ছুটি বাড়ানোর আবেদন করেছেন কি না জানতে চাইলে আইন সচিব বলেন, চিঠিতে তিনি যা লিখেছেন, আমি আপনাকে সেটাই বলেছি। উনার ছুটি উনি নিজেই নেন। রাষ্ট্রপতিকে বিষয়টি অবহিত করলেই চলে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সন্ধ্যায় বলেন, মন্ত্রণালয়ে উনার একটা চিঠি এসেছে শুনেছি। আমি এখনও দেখিনি।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, চিঠিতে বিদেশে অবস্থানের কারণ হিসেবে শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক অবসাদগ্রস্ততার কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি সিনহার চাকরির মেয়াদ রয়েছে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরুর আগে গত ২৪ অাগস্ট তিনি শেষ অফিস করেন এবং অবকাশ শেষে ৩ অক্টোবর আদালত খোলার দিন থেকে ছুটিতে যান।
রাষ্ট্রপতি বরাবরে প্রধান বিচারপতির পাঠানো ছুটির যে আবেদন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের দেখিয়েছেন, সেখানে বলা ছিল, ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে এর আগে তিনি দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং গত বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। বিশ্রামের জন্য ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন তিনি ছুটি কাটাতে চান।
এর মধ্যে গত ৭ অক্টোবর বিচারপতি সিনহার অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়ার খবর আসে। আদালতের একটি সূত্র সেদিন জানায়, প্রধান বিচারপতি ও তার স্ত্রী সুষমা সিনহা তিন বছরের ভিসা পেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে বড় মেয়ে সূচনা সিনহার কাছে উঠবেন তারা।
আর ৩ অক্টোবর সরকারের এক প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, বিচারপতি সিনহাকে রাষ্ট্রপতি এক মাসের ছুটি মঞ্জুর করেছেন এবং এই সময়ে জ্যেষ্ঠ বিচারক মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির কার্যভার দিয়েছেন। এখন প্রধান বিচারপতি আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিদেশ থেকে ফিরতে চাইলে তার ছুটি বাড়াতে হবে।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে থাকা প্রধান বিচারপতির হঠাৎ ছুটিতে যাওয়া নিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা চলছে। বিএনপি অভিযোগ করেছে, রায়ের কারণে ‘চাপ দিয়ে’ প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার বলছে, এর সঙ্গে রায়ের কোনো সম্পর্ক নেই, চাপেরও কোনো বিষয় নেই।
প্রধান বিচারপতি বা আদালতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।