• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ঢাবির ভিসি প্যানেল অবৈধ: হাইকোর্ট

প্রকাশ:  ১০ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:৩৮ | আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৭, ১৯:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নির্বাচনের জন্য গঠিত প্যানেলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নতুন সিনেট গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

হাইকোর্টের আদেশে বিচারক আগামী ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ সিনেট গঠন করে উপাচার্য (ভিসি) প্যানেল মনোনয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আশিকুল হক। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।

পরে মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, রুল পুরোপুরি মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন। ফলে ২৯ জুলাই ডাকা বিশেষ সভা ও ওই সভায় মনোনীত তিন সদস্যের উপাচার্য প্যানেল অবৈধ। এছাড়া ছয় মাসের মধ্যে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সিনেট গঠনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

সিনেট সভা আহবানের বিষয়ে গত ১৬ জুলাই ঢাবির রেজিস্ট্রার একটি চিঠি দেন। এতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩ আর ২১ (২) ধারার অর্পিত ক্ষমতাবলে উপাচার্য, ২৯ জুলাই বিকেল চারটায় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন। বিশেষ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩, ১১(১) ধারা অনুযায়ী চ্যান্সেলরের মাধ্যমে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের জন্য তিনজনের একটি প্যানেল মনোনয়ন করা হবে। ভাইস চ্যান্সেলরের প্যানেলে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা হবে, নাম প্রস্তাবের সময় তাদের লিখিত সম্মতি সিনেট চেয়ারম্যানের কাছে পেশ করতে হবে। সভায় উপস্থিত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করা হয়।

১৬ জুলাই তারিখে ঢাবি রেজিস্ট্রারের দেওয়া এই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৫ জন হাইকোর্টে রিট করেন। তারা রিটে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের অনেক প্রতিনিধির পদ খালি। সিনেটের প্রতিনিধি হিসেবে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের পদ পূরণ না করে সিনেট সভা ডেকে উপাচার্য-প্যানেল মনোনয়ন করা ঠিক নয়। 

২৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটসহ মোট ১৫ জনের করা ওই রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন এবং সিনেট সভার ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশ ১৯৭৩ সালের ২০(১) ধারা অনুযায়ী সিনেট গঠন না করে ২৯ জুলাই ডাকা সভাটি কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপিল করেন। এরপর ২৬ জুলাই হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ ৩০ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। 

এরপর ছাত্র-শিক্ষকদের আপত্তি ও অসন্তোষ সত্ত্বেও এ স্থগিতাদেশের সুবাদে কোনও প্রকার আইনি বাধা ছাড়াই ২৯ জুলাই সিনেটের বিশেষ সভাটি যথারীতি অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তিন সদস্যের ভিসি-প্যানেল মনোনীত করা হয়।

এই তিনজন সদস্য হলেন সদ্য-সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও নীল দলের আহ্বায়ক আবদুল আজিজ।

৩০ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। ওই দিন রিট আবেদনকারী পক্ষ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় নেন। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার আবেদনটি ফের শুনানিতে ওঠে। ওইদিন আপিল বিভাগ তিন সদস্যের ভিসি-প্যানেলের পরবর্তী কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ২৯ জুলাইয়ের সিনেট বৈঠক নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন।

সে মোতাবেক ২১ আগস্ট থেকে এ রুল শুনানি শুরু হয়। গত রবিবার রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত আজ মঙ্গলবার রায়ের দিন ধার্য করেন। 

এদিকে উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ০৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেন রাষ্ট্রপতি।

সর্বাধিক পঠিত