খালেদাকে ছাড় দিচ্ছে না সরকার, সমঝোতা হবে পর্দার অন্তরালে
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড় দিচ্ছে না সরকার। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির ভাগ্যে কি ঘটবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তার ধূম্রজাল ঘনীভূতই হচ্ছে। প্রায় আড়াই মাস লন্ডনে কাটিয়ে দেশে ফিরছেন বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকা সফরে আসা বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে তার বৈঠক হবে। কিন্তু বৈঠকে সুষমা কি বার্তা দেন, সেদিকেই সবার দৃষ্টি।
বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যতই শেখ হাসিনার বাইরে নির্বাচনী সহায়ক সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রস্তাব দিলেও তা কতটা আমল পাবে তা নিয়ে পর্যবেক্ষক মহলেও রয়েছে গভীর সন্দেহ। শেখ হাসিনার সরকার সংবিধানের বাইরে একচুলও নড়ে কোনো ছাড় দিবে না। দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিচার প্রায় শেষ পর্যায়ে। নতুন বছরের শুরুতেই তিনি দন্ডিত হলে নির্বাচনের বাইরে রেখেই ভোটযুদ্ধের পথে অগ্রসর হতে চায় সরকার।
এমনকি, অনেক ফৌজদারী মামলা রয়েছে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। অনেক নেতাও ভোটের আগে দন্ডিত হয়ে নির্বাচনে অযোগ্য হবেন এমন খবর অনেক দিন ধরেই বাতাসে বইলেও তা কেউই আর উড়িয়ে দিচ্ছেন না। বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ঢাকা ফিরলে বিএনপির নেতাকর্মীরা অভ্যর্থনার নামে বিশাল শো-ডাউন করে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসবেন-সেটিও সরকার করতে দেবে না। নিরপত্তার অজুহাতে কড়া পুলিশী প্রহরায় সরকারই বেগম জিয়াকে তার বাসভবনে পৌঁছে দেবে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জনমনে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া যাই থাক; এখন পর্যন্ত সরকারের নিয়ন্ত্রণেই হাওয়া বইছে। সরকার যা চাইছে তাই হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি যে কঠিন, বৈরী ঘূর্ণিপাকে পতিত হয়েছে সেখান থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসবে, আদৌ পারবে কিনা; এমনকি বিএনপি যতই নির্বাচনে আগ্রহী হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত সেটি পারবে কিনা-তা নিয়েও সব মহলে কৌতুহল রয়েছে। বিএনপি যতই ভিতরে ভিতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি রাখুক না কেন, শেষ পর্যন্ত দলীয় ঐক্য সুসংহত রেখে ভোটের চ্যালেঞ্জ নিতে পারবে, নাকি বৃহৎ অংশ বাইরে থেকে খন্ডিত অংশ আসবে; সে নিয়ে প্রশ্ন এখনো রয়েই গেছে।
শাসকদল আওয়ামী লীগ দলকেই সুসংগঠিত করছে, প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ, নির্বাচন উপযোগী শতাধিক আসনে প্রার্থী বদলের মাধ্যমে মনোনয়ন চূড়ান্ত প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। মাঠে সরকারের অংশীদার ও সংসদে বিরোধী দল এরশাদের জাতীয় পার্টিকেও রেখেছে। বিএনপির মূল ধারা বাইরে থাকলে এরশাদসহ সব শরিক দলকে একক নির্বাচনের পথে ছেড়ে দিতে পারে, সেখানে সমঝোতা হবে পর্দার অন্তরালে। বিএনপির মূল ধারা অংশ নিলে হিসাব তখন মহাজোটের ছকে বাঁধা হবে।