ফাদার অপহরণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা রিমাণ্ডে
ঢাকার কাকরাইলের গির্জার ফাদার শিশির নাতালে গ্যাগারিকে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা শামস কবির সৌরভের তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার দুপুরে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবদুল হাই শুনানি শেষে সৌরভকে তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম এ তথ্য জানান।
গত মঙ্গলবার সৌরভকে গাজীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ৮ অক্টোবর শুনানির তারিখ রাখেন।
ঢাকার কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালের ফাদার শিশির গ্যাগারিওকে অপহরণে জড়িত অভিযোগে গত সোমবার রাতে টঙ্গীর মরকুন এলাকার গোলাম কবিরের ছেলে সৌরভকে (২৫) টঙ্গীর পাগার এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় ফাদার শিশির চারজনকে আসামি করে টঙ্গী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
শামস কবির সৌরভ টঙ্গী সরকারি কলেজের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ফাদার অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় নেতাদের সুপারিশে বুধবার তাকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে সৌরভের বাবা গোলাম কবির দাবি করেন, তার ছেলে এ অপহরণের ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়। তার সহকর্মী ও বন্ধুরা বিপদে পড়েছে এমন খবর পেয়ে সে বাস থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এক পর্যায়ে তার বন্ধুরা ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে চলে গেলে পরিস্থিতির স্বীকার হন সৌরভ।
মামলার বরাত দিয়ে টঙ্গী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান জানান, গত সোমবার দুপুরে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফাদার শিশিরের ফোন করে বলা বলা হয়, তার বোন সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন, তিনি আছেন টঙ্গীর পাগাড় ফকির মার্কেটে। তার অবস্থা ভালো নয়, ফাদার শিশির যেন দ্রুত চলে আসেন। এরপর কাউকে কিছু না জানিয়ে সেময় মোটরসাইকেলে করে শিশির টঙ্গীর দিকে রওনা হন।বিকাল ৩টায় ফকির মার্কেটে পৌঁছে যে ব্যক্তি তাকে ফোন করেছিলেন তার সঙ্গে দেখা করেন এবং তার বোন কোথায় রয়েছে তা জানতে চান।
ফাদার শিশির টঙ্গী গেলে ওই ব্যক্তি তাকে বোনের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফকির মার্কেটের কাছে একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে আরও চারজন অপেক্ষায় ছিল। পরে তারা শিশিরকে ওই ঘরে আটকে রেখে তার মোটরসাইকেল, একটি মোবাইল ফোন, হাতঘড়ি, সঙ্গে থাকা ১৩০০ টাকা লুট করে। এরপর শিশিরের কাছ থেকে আরো তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।
এক পর্যায়ে শিশির কৌশলে ঘর থেকে বেরিয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং ‘অপহরণকারীরা’ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সৌরভকে আটক পুলিশে দেয় স্থানীয়রা।
পুলিশ কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৌরভ তার সহযোগী হিসেবে জয়নাল (২৭), জেমস (২৫) ও হাসানের (২৬) নাম বলেছেন। তাদেরও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।