‘জামায়াতের কেউ যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে’
যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর অনেকে বিএনপি ও এর নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে ভোটের পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছে জাসদ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। দলটি ইসিকে বলেছে, জামায়াতের কেউ বিএনপি বা অন্য কোনো দলের নামে বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে সে বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।
রবিবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে এসে এ অভিযোগ করে জাসদ। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসির সংলাপে আসে। আগারগাঁওয়ে ইসির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সভাপতিত্ব করেন।
বর্তমান সংসদীয় আসন বহাল রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তাবসহ ১৭ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছে জাসদ। জাসদ বলেছে, সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণের বিষয়টি আদমশুমারির সঙ্গে সংযুক্ত। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুনভাবে কোনো আদমশুমারি হচ্ছে না। আমরা মনে করি, দশম সংস নির্বাচনের সংসদীয় আসন বহাল রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
দলছুট সাংসদদের ‘জাসদের’ নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য কোনো নামে নতুন দল নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী সময়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও সুপারিশ রয়েছে। কারো নাম উল্লেখ না করে জাসদের প্রস্তাব হচ্ছে-একটি নিবন্ধিত দলের থেকে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য অনিবন্ধিত দলে যোগদান করলে তা ওই অনিবন্ধিত দলকে রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোয়ালিফাই করবে না বলে বিধান যোগ করতে হবে।
জাসদ-জেএসডি ও জাপা-জেপি-বিজেপির কথা উল্লেখ করে আরেকটা প্রস্তাবে বলা হয়, জাসদের পরে ইসির অনুরোধে জেএসডি নামে দল নিবন্ধন নেয়া হয়েছে। নতুনভাবে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা কাছাকাছি নামে কোনো দলকে নিবন্ধন দেয়া যাবে না।
জাসদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে-নিবন্ধিত দলকে ব্যয় নির্বাহে ও প্রচারণায় নিয়মিত অনুদান, সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ইভিএম ব্যবহার, দলের অনুদান আয়কর মুক্ত করা, অনলাইনে মনোনয়নের ব্যবস্থা, ভোটে কালো টাকার ব্যবহার রোধে প্রার্থিতা বাতিল, স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন তালিকার শর্ত বাতিল, জামানাত ২০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১০ হাজার টাকা করা, স্থানীয় ও সংসদ নির্বাচনে স্বপদে থেকে নির্বাচন করায় অযোগ্যতা বিধান, পাবলিক ও বেসরকারি থেকে অবসরের পর ভোটে অংশ নেয়ার শর্ত শিথিল করা, প্রতীক বরাদ্দের দিনই জোটভুক্তদের প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ রাখা ও নির্বাচন আর্কাইভ স্থাপন করতে হবে।
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইন সংস্কার, সীমানা পুনঃনির্ধারণসহ ঘোষিত রোডম্যাপ নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে ইসি। গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। পরে ১৬ ও ১৭ আগস্ট অর্ধশত গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে সংলাপ করে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ নেয় ইসি।
ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে গত ২৪ আগস্ট নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু করে ইসি। এরই মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে নির্বাচন কমিশন। সূচি অনুযায়ী আগামীকাল ৯ অক্টোবর জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।