প্রধান বিচারপতি গৃহবন্দীর পরে এখন নজরবন্দী: বিএনপি
সন্ত্রাসী কায়দায় প্রথমে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে গৃহবন্দী করে রাখার পরে এখন নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধান বিচারপতিকে বলপ্রয়োগ করে এক মাসের ছুটি দেয়ার ঘটনায় হতবাক দেশবাসী। ছুটির দরখাস্তে প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে সরকারের এজেন্সিগুলো। নজিরবিহীন ঘটনা হচ্ছে তার দরখাস্তের ৯টি শব্দের বানানে ভুল।
রবিবার বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, একটা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলো শেখ হাসিনার সরকার। এখন সার্বক্ষণিক প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগের জন্য। বর্তমান হাসিনার সরকার কতখানি বেপরোয়া ও নীতি জ্ঞানহীন স্বৈরাচার হতে পারে তার পরিমাপক যন্ত্র এখনো আবিষ্কার হয়নি।
বিএনপির এই নেতার দাবি, প্রধান বিচারপতির ওপর আক্রোশের নির্দেশদাতা স্বয়ং সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন এজেন্সির লোকেরা প্রতিনিয়ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে পারলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বারবার চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত দেখা করতে পারেননি। প্রধান বিচারপতি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে অসুস্থতার কথা বলা হচ্ছে। চিকিৎসার নামে ডাক্তার পাঠানো হচ্ছে। যা সরকারের নির্লজ্জ নাটক। জনগণ সরকারের এসব সাজানো নাটক তিল পরিমাণও বিশ্বাস করে না। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলেই সরকারের উদ্দেশ্য সাধিত হয় এবং একদলীয় শাসনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে বিলম্ব হবে না।
রিজভী বলেন, সরকার সম্পূর্ণরূপে বিচার বিভাগকে আয়ত্তে নিতে পারলে অত্যাচারী সরকার বিচার বিভাগকে দিয়ে নিষ্ঠুর বল প্রয়োগে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে দমন করতে চাইবে। নিজের দুর্বিনীত ইচ্ছাকে জুডিশিয়াল টেরোরিজমের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে। আইনি খোলসের মধ্যে সরকারবিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। তাই মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকার তাগিদে এই মুহূর্তে দল-মত-বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সবাইকে ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন শেষে দেশে ফেরার পর সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের ভূমিকার কারণেই আন্তর্জাতিক বিশ্ব রোহিঙ্গাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে । তিনি এও বলেছেন আমি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারবো। দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে-রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের ভূমিকা কী ছিল। বরং আন্তর্জাতিক ভূমিকার কারণেই আওয়ামী সরকার রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলতে বাধ্য হয়েছে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, প্রবঞ্চনামূলক জনগণকে ধোঁকা দেয়ার শামিল।