রোহিঙ্গা নিয়ে বিএনপির কনসার্ন রাজনীতি: কাদের
দেশে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিএনপির কোন কনসার্ন নাই দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদের কনসার্ন রাজনীতি। রোববার দুপুরে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে এ সব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আপনারা বিএনপি কি বললো এটার উপর বার বার শুধু বলছেন এটা বলছে, ওটা বলছে। বিএনপির রোহিঙ্গা সমস্যার ব্যাপারে তারা কতটা আন্তরিক? আজকে বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গা সমস্যা বা বাংলাদেশ যে সঙ্কটে পড়েছে এখানে তারা কতটা কনসার্ন? তাদের কনসার্নটা রাজনীতির। আজকে দেশে তিন দফা বন্যা হলো, এরকম একটা গভীর সঙ্কটে আজকে দেশ নিপতিত, তাদের নেত্রী দিনের পর দিন শুধু তারিখ দিয়েই যাচ্ছেন। তিনি দেশে আসছেন না। তাদের এক নম্বর যিনি তারই তো এ ব্যাপারে কোন উদ্বেগ, কোন চিন্তা আছে বলে মনে হয় না।
তিনি বলেন, বাকিরা এখানে বসে শুধু প্রেস ব্রিফিংয়ে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছেন। তারা তাদের কর্মীদেরকে চাঙ্গা করার জন্য চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে কর্মীরা যে হতাশ, এ হতাশ কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য আবোল তাবোল বকছেন। এছাড়া আমি অন্য কিছু দেখছি না।
রোহিঙ্গা সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যার্থ হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, যদি কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যার্থ হত তাহলে মিয়ানমারের সুর নরম হলো কেন? যারা এই প্রশ্ন করে মিয়ানমারের মন্ত্রী যেখানে তারার রোহিঙ্গা অভিযান, বিতাড়ন, জাতিগত নিধন একটা চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল এবং তহারা এ অবস্থানে অনড় এটিই বোঝা গিয়েছিল। এখন তো মিয়ানমারের মন্ত্রী এসে জয়েন্ট অর্ক করার একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজেই সুর নরম না হতো, অবস্থানের যদি পটরিবর্তন না হতো তাহলে মিয়ানমারের মন্ত্রী কি করে বাংলাদেশে এসে আলোচনা করে, জয়েন্ট অর্কিং করে। আমাদের সব কিছুর জন্য একটু ঠান্ডা মাথায় অপেক্ষা করতে হবে। যদি কোন ফাদে আমরা পা দেই তাহলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।
জাতিসংঘ আবার আশঙ্কা করছে মিয়ানমার থেকে আবার রোহিঙ্গা ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আসতে পারে আশঙ্খা আছে, এটা আমরা দেখি। আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগও অব্যাহত রয়েছে। কাজেই এ অাশঙ্কা সত্য হয় কিনা সেটাও দেখতে হবে। এখন যেটা আসছে ছিটে ফোটা, কিছু লোক আসছে। আমি স্পটে ছিলাম সিনস দ্যা বিগেনিং অব দ্যা ক্রাইসিস। কিভাবে আসছে সেটা আমি নিজেই সেই জনস্রোতটা দেখেছি। কিন্তু এইটা এখন আর আগের মত সেই জনস্রোত আর নেই। আসতে পারে এ আশঙ্খা জাতিসংঘ করছে। কাজেই জাতিসংঘেরই এখানে কঠোর অবস্থান নেয়া উচিত। যাতে করে নতুন করে ইনফ্লাক্স হতে না পারে।
মিয়ানমার বারবার সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ কি পদক্ষেপ নিয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের প্রথমে কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। তাদের সামরিক হেলিকপ্টার আমাদের সিমান্ত লঙ্ঘন করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ব জনমতের চাপে, জাতিসংঘসহ আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে সেটা এখন আর হচ্ছে না। দেট ইজ নাউ নন এক্সজিসটেন্স।
সীমান্তে রোহিঙ্গা ঢল বন্ধ করতে সসরকার কোন উদ্যোগ নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন মানবিক কারণে আমরা যখন সিমান্তের দরজা খুলেছি তখন আবার কি এমন কারণ ঘটলো যে আমাদের মানবিক যে দৃষ্টিকোণ এটির পরিবর্তন হবে। এইটা আমোর মনে হয়ে না যে পর্যন্ত না আমাদের কূটনৈতিক উদ্যোগ জাতিসংঘসহ বিশ্ব জনমতের চাপে বন্ধ না হবে, আমরা জোর করে দরজা বন্ধ করে দিতে পারি না। কারণ এক আমাদের মানবিক দৃষ্টিকোণটা এক এক সময় এক এক রকম করতে পারি না। এটা মানবিক বিপর্যয়। এই বিপর্যয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর যে উদার চিত্ততা তিনি দেখিয়েছেন সেজন্য তিনি আজকে বিশ্বে বিপন্ন মানবতার লাইট হাউজে পরিণত হয়েছেন। আমি মনে করি ধৈয্য ধরতে হবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে। কোন প্রকার ফাদে আমরা পা দেব না। আমাদের তরফ থেকে কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত থাকবে। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের উপর যে বাড়তি জনসংখ্যা চেপেছে এই বাড়তি জনসংখ্যা আমাদের দেশ থেকে যদি তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়া হয় সেটার জন্যই আমরা চাপ প্রয়োগ করতে আমরা বিশ্বসভাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমাদের প্রতিবেশীদেশগুলো তাদেরই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা দরকার। কারণ প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে এ আগুনের আচ কিন্তু অন্য প্রতিবেশীরও ঘরে গিয়েও লাগবে।
মিয়ানমারের এই জাতিগত নিধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর জনসংখ্যার বাড়তি চাপ সৃষ্টি করা উদ্দেশ্য প্রনোদিত ষড়যন্ত্র কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমি জানি না। ষড়যন্ত্র তো একটা আছেই। এখন মিয়ানমার এদেরকে তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। এবং এখানে এই মুহুর্তে কেন হলো সেটা অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে। এটা আরো খতিয়ে দেখাতে হবে। হুট করে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। চক্রান্ত তো একটা আছেই। চক্রান্তের স্বরূপটা এখনো বলা যাচ্ছে না। কারণ এটা আরো জনতে হবে। আরো বুঝতে হবে, আরো খতিয়ে দেখতে হবে।