১৩০ বিতর্কিত মন্ত্রী-এমপির তালিকা শেখ হাসিনার টেবিলে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচনে ‘জয়-পরাজয়’কে দেশের প্রধান দুই দলই ‘বাঁচা-মরা’র ভোট হিসেবে দেখছে। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত। এর অংশ হিসেবে ১৩০ বিতর্কিত মন্ত্রী-এমপিদের আমলনামা দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেবিলে পরেছে। যাদের কারণে দলের ও প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে তারা ‘শাস্তি স্বরূপ’ আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকেট বঞ্চিত হবেন। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, আগামী নির্বাচন হবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এবং ভোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। এটি মাথায় রেখেই ‘জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের’ প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিভিন্ন মাধ্যমে বিতর্কিত এমপি-মন্ত্রীদের তথ্য সংগ্রহ করেছেন, একাধিক সংস্থাও আলাদা সারসংক্ষেপ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এ তালিকায় শতাধিক এমপি-মন্ত্রীর নাম রয়েছে। সূত্র জানায়, নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকলেও এখন থেকেই হোমওয়ার্ক শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে একাধিক সংস্থা ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের সর্বশেষ প্রতিবেদন এখন তার হাতে রয়েছে। রয়েছে একমাস পর পর পরিচালিত মাঠ জরিপগুলোর ফলাফলও। এসব প্রতিবেদনের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে ১৩০ বিতর্কিত এমপি-মন্ত্রীর নেতিবাচক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
সূত্রমতে, এমপি-মন্ত্রীদের আমলনামা সংগ্রহ ছাড়াও তিনি সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনেক আসনে বিকল্প এক বা একাধিক প্রার্থীর কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তাই দলীয় প্রার্থী বাঁছাইয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। ভালোভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এবার পর্যবেক্ষণ ও জরিপের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। ‘অজনপ্রিয়’ ও ‘গডফাদার’ চরিত্রের কাউকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জনবিচ্ছিন্ন’, ‘গডফাদার’ ও ‘বিতর্কিত’ এমপি-মন্ত্রীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আগামী নির্বাচনে যার যার কর্মফল মনোনয়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। এতে তার কিছু করার নেই। যে জনপ্রিয় সে মনোনয়ন পাবে। দলীয় সভাপতির বক্তব্য অনেকের ভেতরে দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। ওই সভায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, যারা বর্তমানে এমপি আছেন, তারা নিশ্চিত মনোনয়ন পাবেন- এমন ধারণা নিয়ে থাকলে ভুল করবেন। কারণ আগামী নির্বাচন ২০১৪ সালের মতো হবে না। যারা এলাকার জনগণের জন্য কাজ করেছেন, জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। আমি কারও দায়িত্ব নেব না। নিজ দায়িত্বে জয়লাভ করে আসতে হবে।