৫ বছরের ভিসা চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত মেয়ের সঙ্গে থাকার জন্য পাঁচ বছরের জন্য ভিসার আবেদন করেছেন সস্ত্রীক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজ'র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে সুপ্রিম কোর্ট এবং ভিসা প্রসেসিং সেন্টার এর বরাতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার গুলশানে ডেল্টা লাইফ টাওয়ারে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে আসেন এস কে সিনহা এবং তার স্ত্রী। সেখানে তারা পৃথক পৃথকভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আবেদন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে বরাতে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সেখানে প্রধান বিচারপতি এবং তার স্ত্রী আধাঘণ্টার মতো সময় অপেক্ষা করেন। এর আগে ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গত ৩ অক্টোবর থেকে ৩০ দিনের ছুটিতে যাওয়ার তিন দিন পর অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য সস্ত্রীক আবেদন করলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
এদিকে আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে কাকরাইলে অবস্থিত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সরকারি বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা।
এ ছাড়া আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কয়েকজন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সকালে রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বাসভবনে গিয়ে দেখা করে এসেছেন।
রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এ দুজন ছাড়াও আরো কয়েকজন পৃথক পৃথক সময়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
উল্লেখ্য, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে বেশ কিছু মন্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগের তীব্র রোষের মুখে আছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা থেকে শুরু করে প্রায় সব পর্যায়ের নেতাকর্মীই প্রকাশ্যে প্রধান বিচারপতির সামলোচনা করেছেন। একই ইস্যুতে কঠোর সমালোচনা এসেছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকেও। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে গত ২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি বরাবর ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে এক মাসের ছুটির আবেদন করেন প্রধান বিচারপতি। ছুটির আবেদনে ইতোপূর্বে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘসময় চিকিৎসাধীন থাকার কথা জানিয়ে বর্তমানে বেশ কিছুদিন ধরে নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন এসকে সিনহা।
প্রধান বিচারপতির অনেকটা আকস্মিকভাবে করা এই ছুটির আবেদন দেশব্যাপী নানা আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়। এক পর্যায়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদনপত্রটি জনসম্মুখে উন্মুক্ত করেন। যদিও বিএনপি দাবি করে আসছে চাপ দিয়ে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে আইনমন্ত্রী ছুটি নেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির ওপর কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি প্রধান বিচারপতি যেন সুস্থ হয়ে পুনরায় কর্মস্থলে ফিরে অসতে পারেন, সেই দোয়াও রাখেন।