প্রধান বিচারপতির অসুস্থতা কিছু নয়, এটা ভুয়া: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুরন্দ্রে কুমার (এস কে) সিনহা বর্তমান সরকারের ক্রোধের শিকার। বিচারপতির অসুস্থতার তথ্যটিও ভুয়া। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ কথা বলেন রিজভী। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান অপহরণের প্রতিবাদে ও সন্ধানের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশের পর থেকে মন্ত্রী-এমপিদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি। জাতীয় সংসদেও তাঁর সমালোচনা করা হয়।
এর মধ্যেই গত ১০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি দেশের বাইরে ছুটিতে ছিলেন। ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফেরেন। গত সোমবার প্রধান বিচারপতি অসুস্থতাজনিত কারণে রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটি চান। ‘প্রচণ্ড চাপের মুখে’ প্রধান বিচারপতি ছুটি নিতে বাধ্য হয়েছেন বলেও গতকাল মঙ্গলবার বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা দাবি করেছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধান বিচারপতি সরকারের ক্ষোভ এবং ক্রোধের শিকার। প্রধান বিচারপতির অসুস্থতা কিছু নয়, এটা ভুয়া। এটার একমাত্র টার্গেট হলো সরকারের বিরুদ্ধে ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে কোনো কথা বলবে না। প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে যখন সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, তখন মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এ নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি জানান, প্রধান বিচারপতি ক্যানসার আক্রান্ত, তাই তিনি ছুটি নিয়েছেন।
আনিসুল হক বলেন, যারা প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গণতন্ত্র ব্যাহত করার ষড়যন্ত্রের জাল বুনছিল, তারাই তাঁর ছুটিতে যাওয়ার বিষয় নিয়ে চিৎকার করছে। তাদের ষড়যন্ত্র ব্যাহত হয়েছে। মানুষ অসুস্থ হতে পারেন না? এমন তো কোনো কথা নেই। যেকোনো মানুষ যেকোনো সময় অসুস্থ হতে পারে।
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গতকাল মন্দিরে পূজা দিতে গিয়েছেন এ কথা উল্লেখ করে আজ রিজভী আহমেদ বলেন, আইনমন্ত্রী বলছেন, ‘বিচারপতির ক্যানসার, এ জন্য ছুটি নিয়েছেন।’ এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম বলছেন, বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এটা অন্য কিছু না, শুধু সরকারের ক্ষোভের শিকার।
এ মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুউল্লাহ চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, খন্দকার লুৎফর রহমান, মাওলানা তোফাজ্জল, মুক্তিযোদ্ধা সাদেক আহমেদ খান, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ ২০ দলীয় জোটের অন্য নেতাকর্মীরা।