নাতিন আজালিয়ার সাথে শেখ হাসিনার একান্ত বৈঠক!
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৫২ | আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০১৭, ১০:২২
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
প্রিন্ট
মাঝখানে, একটু পেছনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি; দুই পাশে সাদা চেয়ারে বসা শেখ হাসিনা ও আজালিয়া সিদ্দিক! ছবি না দেখে, শুধু বর্ণনা পড়লে, যে কেউ ভাববে দুই নেত্রীর মিটিং হচ্ছে!
চাদর গায়ে নানি শেখ হাসিনা অত্যন্ত সিরিয়াস ভঙ্গিমায় ‘দ্বিপাক্ষিক’ কথা সারছেন নাতিন আজালিয়ার সাথে। আজালিয়া সিদ্দিক, বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানার সন্তান ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এর মেয়ে।
এমনই একটি ছবি নিজের ফেসবুক পেইজে শেয়ার করেছেন লেবার পার্টি থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হওয়া টিউলিপ সিদ্দিক।
দুই সপ্তাহের ব্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র সফর, শেষ দিকে এসে শারীরিকভাবে খানিকটা অসুস্থ হয়ে পড়া ও পিত্তথলির পাথর অপসারণ, সব মিলে বেশ ধকল যাচ্ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। ফেরার পথে লন্ডনে নিজের একমাত্র বোন শেখ রেহানা, তার দুই মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও রুপন্তি সিদ্দিক এবং নাতিন আজালিয়া সিদ্দিকের সাথে একান্তে পারিবারিক কিছু সময় কাটাতে পারছেন শেখ হাসিনা। বোন, ভাগ্নিদ্বয়, নাতিনকে কাছে পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন চনমনে হয়ে উঠেছেন। ছবিতে চাদর গায়ে শেখ হাসিনার হাসিতে সেটি প্রকাশ পাচ্ছে।
এর আগে টিউলিপ সিদ্দিক এর শেয়ার করা আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে, বিছানায় বসা দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, তাদের পাশে নিজের কন্যা আজালিয়া সিদ্দিককে কোলে নিয়ে হাসছেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। লন্ডনের কিঞ্চিৎ শীতল পরিবেশে উষ্ণতা পেতে গায়ে চাদর জড়িয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবিটি সেলফি হিসেবে নিয়েছিলেন রুপন্তি সিদ্দিক।
লন্ডনে বোন শেখ রেহানা পরিবারের সাথে একান্ত বিশ্রামের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ফাইলেও স্বাক্ষর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নেত্রীর বিশ্রাম অবস্থান নির্বিঘ্ন রাখতে সেন্ট্রাল লন্ডনের সেভয় হোটেলের সামনে সার্বক্ষনিক অবস্থান নিয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ইউরোপের নানা দেশ থেকেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লন্ডনে অবস্থান করছেন।
মঙ্গলবার লন্ডন পৌঁছার পরই এরকম ১০টি জরুরি ফাইলে স্বাক্ষর করেছেন প্রধানমন্ত্রী, এমনটিই জানান তার প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম। প্রধানমন্ত্রী লন্ডন থেকে মঙ্গলবার এরকম ১০টি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক ফাইল (ই-ফাইল) ছেড়েছেন, এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোট ৬১টি ই-ফাইলে স্বাক্ষর করেন।
এদিকে লন্ডন-ভিত্তিক শতবর্ষী বাংলা দৈনিক সত্যবাণী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সেন্ট্রাল লন্ডনের সেভয় হোটেলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগসহ কমিউনিটির নেতৃস্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রবাসীদের এই সাক্ষাত অনুষ্ঠান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে ১৫ দিন যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ৩ অক্টোবর লন্ডন পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের পথে ঢাকা ছেড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২১ সেপ্টেম্বর তিনি সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতা করেন। জাতিসংঘের কর্মসূচি শেষে ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভার্জিনিয়ায় যান। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অপসারণ করা হয় তার পিত্তথলির পাথর। ৭ অক্টোবর লন্ডন থেকে দেশে ফেরার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।
চলমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক অবস্থান নেয়ায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে বিশ্ববাসীর সামনে পরিচয় করিয়ে দেয়। এবারের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে পুরো বিশ্বের মনোযোগ ছিল শেখ হাসিনার উপর। শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ভাষণে রোহিঙ্গাদের প্রাপ্য স্বীকৃতি দিয়ে নিজদেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানান।