ফিল্মি স্টাইলে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ দখল

পুরান ঢাকার জংশন রোডের ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফিল্মি স্টাইলে দখল হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেডিকেল কলেজের গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে আদালতের রুল জারি, শিক্ষকদের ভোটাভুটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য আখতারুজ্জামানের সিদ্ধান্তের কারণে স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ দলবল নিয়ে বুধবার বিকালে মেডিকেল কলেজটি নিজেদের মতো দখল করে নেন।
প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন স্বাধীনতা চিকৎসক পরিষদ (স্বাচিব) সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান। তিনি দায়িত্ব নেবার পর থেকেই কলেজে ভর্তি বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব অনৈতিক কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। তাকে সরিয়ে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদকে কলেজ গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান করার জোর তদবির শুরু হয় যখন থেকে তিনি হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন।
সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আদালত রুল জারি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী বরাবর জানতে চায় যে, কেন সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যান করা যায় না, এই মর্মে চিঠির উত্তরও দিয়েছিলেন আরেফিন সিদ্দিকী। তবে রুলের বিপরীতে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা আবেদন করেছিলেন যেন তা পরিবর্তন না করা হয়।
সর্বশেষ এ বিষয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ এবং ইকবাল আর্সেনালের মধ্যে ভোটভুটি হয় কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে যেখানে ১০৮ টি ভোটের মধ্যে আর্সেনাল ১০৫ টি এবং কাজী ফিরোজ রশীদ মাত্র ৩ ভোট পান।
এরপরও নিজের দলবল নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ ঢাবির নতুন উপাচার্যের আদেশ নিয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের গর্ভনিং বডির চেয়ারম্যানের কক্ষ দখল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হবার পর থেকে প্রায় দুই মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হচ্ছে না।
এসব বিষয়ে ইকবাল আর্সেনাল পূর্বপশ্চিমকে টেলিফোনে বলেন, আমার সঙ্গে তিনি এমন ব্যবহার না করলেও পারতেন। সামনে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাতে কোটি টাকার বাণিজ্য করতেই এমনটা করেছেন। আমি সম্মানের সঙ্গেই চেয়ার ছেড়ে দিতে রাজি আছি, তবে কেন এসব পেশী শক্তি প্রদশর্ন করা হবে?
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত কাজী ফিরোজ রশীদকে ফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।