রোহিঙ্গাদের জন্য ফখরুলের কবিতা পাঠ
মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে লেখা একটি কবিতা পড়ে শোনালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে জাসাসের উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ‘আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী’তে তিনি যে কবিতাটি পড়ে শোনান, তা লিখেছেন গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। চলচ্চিত্র নির্মাতা মাজহারুল আনোয়ার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য।
‘স্টপ জেনোসাইড’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার ছবি ও ভিডিওচিত্র দেখে ফখরুল বলেন, এই প্রদর্শনীতে আজকে কিছুমাত্র অংশ উঠে এসেছে, যারা সেখানে( কক্সবাজার) যাবেন দেখবেন মনুষ্যত্বের এরকম অবমাননা একবিংশ শতাব্দীতে আমরা সহজে ভাবতে পারি না।
এরপর তিনি বলেন, আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় গীতিকার-কবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার তিনি এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আমাকে তার লেখা একটা কবিতা দিয়েছেন। সেই কবিতাটি আমি এখন পাঠ করব।
এক সময়ের শিক্ষক ফখরুল ‘অবাক হয়ে ভাবি’ শিরোনোম কবিতাটি পড়তে গিয়ে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন।
কবিতাটি
অবাক হয়ে ভাবি। রোহিঙ্গাদের কতটাই ছিলো এমন দাবি। একটি ভিটে, একটি ঘর, একটি সংসার। তীব্র ঝড়ের আঘাতে তা হয়ে গেলো ছারখার।
মানবতা আজ নিপীড়িত, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত। একটু মমতা কী কারো ছিল না মনে সঞ্চিত।
মায়ের বুকে কাঁদছে ওই রক্ত ঝরানো শিশু। কোথায় ভগবান, কোথায় নদী, কোথায় বৌদ্ধ যীশু?
ওদের নিয়ে পত্রিকাতে কত হয় লেখা। গালভরা সব বক্তৃতা শুনি, তারপরেও ওরা একা।
সাগরের জলে ভেসে যায় ওই শত শত কত লাশ। পৃথিবী কী মনে রাখবে বিবর্ণ ইতিহাস।
আধপেটা খেয়ে কেটে যায় ওই কত দিন কত রাত। ওদের জন্য আসে না তো আর শান্তির সুপ্রভাত।
গণতন্ত্র, ধনতন্ত্রের বাক্সে হয়েছে বন্দি। রাজনীতি তাই অরাজনীতি সাথে করেছে সন্ধি।
শোন হে মানুষ, তীব্র কন্ঠে করে যাও প্রতিবাদ। গণতন্ত্রের জয় হবেই হবে, এটাই শেষ সংবাদ।
কবিতা পাঠের পর ফখরুল বলেন, আমি গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই এই দুঃখের দিনে, এই কষ্টের দিনে শুধু চোখের পানি না ফেলে, আজহারি না করে তিনি উঠে দাঁড়াতে বলেছেন।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পুনর্বাসন করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
অনুষ্ঠানে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে দিঠি আনোয়ার বাবার লেখা ‘ওরা এখন মানুষ নয়, শুধুই রোহিঙ্গা’ গানটি গেয়ে শোনান, যার সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন আহমেদ কিসলু।