• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

অপহরণের ৩ দিন পর বিএনপি নেতার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার

প্রকাশ:  ০২ অক্টোবর ২০১৭, ১৮:৩৩
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নিখোঁজের ৩ দিন পর উপজেলা জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল সভাপতি জহুরুল ইসলামের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে দাওয়াত খেতে গিয়ে নিখোঁজ হন জহুরুল ইসলাম। পরে রোববার রাতে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নাগেশ্বরীর পৌর এলাকার সাতানীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

জানা যায়, জহুরুল ইসলাম নাগেশ্বরী পৌরসভার আশারমোড় কবিরের ভিটা গ্রামের মৃত ময়নুদ্দিনের ছেলে। তিনি ওধুষ ব্যবসা করেন। 'শীতল মেডিসিন কর্নার' নামে তার একটি ওষুধের  দোকান রয়েছে।

গত শুক্রবার বিকালে পার্শ্ববর্তী ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের নাগেশ্বরীর সাতানীপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে জহুরুল আর ফিরে আসেননি। ওই রাতে টহল পুলিশ পৌরসভার কালীরপাঠ জোড়া ব্রিজ নামক স্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। পরে জানা যায়, সেটি জহুরুল ইসলামের।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর স্বামীকে না পেয়ে তার স্ত্রী লাইজু বেগম পরের দিন জাহাঙ্গীর আলম (২৭) ও তার নানি শাশুড়ি কুড়িগ্রাম সদর থানা ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কৈকুরী ভাটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী ছাফিয়া বেগমসহ (৬০) অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ জাহাঙ্গীর আলম ও তার নানি শাশুড়ি ছাফিয়া বেগমকে আটক করে। ওই দিন দুপুরে পুলিশ জোড়া ব্রিজের আশপাশে অভিযান চালিয়ে জহুরুলের হেলমেট ও রেইনকোর্ট উদ্ধার করে। এতে পুলিশের সন্দেহ হয় জহুরুলকে মেরে জোড়া ব্রিজের নিচে গীড়াই বিলে লাশ গুম করা হয়েছে। ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি এনে সেখানে অনুসন্ধান চালিয়েও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

পরে আটককৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের স্বীকারোক্তিমোতাবেক পুলিশ রোববার রাত সাড়ে ১২টায় জাহাঙ্গীরের ভাড়া বাসার ঘরের পেছনে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখা বালুর বস্তার নিচ থেকে ওই বিএনপি নেতার লাশ উদ্ধার করে। জহুরুলের নাক, মুখ ও মাথা থেঁতলে দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে জাহাঙ্গীরের স্বীকারোক্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও ২ জনকে আটক করা হয়। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করেনি।

একাধিক সূত্র জানায়, আসামি জাহাঙ্গীর আলম তার মালিক জহুরুলকে বলেন, তার নানি শাশুড়ি ছাফিয়া বেগম কয়েক দিন আগে মাটির নিচে একটি সোনার নৌকা পায়। সেটি বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে শুক্রবার তাকে দাওয়াত দিয়ে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অচেতন করে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে শিল দিয়ে তার নাক-মুখ, মাথা থেঁতলে দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হত্যাকারীরা। পরে তারা তার লাশ ঘরের পেছনে বালুর বস্তার নিচে রেখে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখে। তাদের ধারণা, ব্যবসায়ী জহুরুলের ডাচ বাংলা (রকেট), বিকাশ, ফ্লেক্সিলোড, ওষুধ ব্যবসায়  টাকা ও নগদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতে সোনার নৌকার নাটক সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

নাগেশ্বরী থানার ওসি আফজালুল ইসলাম বলেন, আটককৃতদের কুড়িগ্রাম জেলহাজতে ও লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত