পাকিস্তান-আফগানিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে, সীমান্তে নিহত ৮
পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। এবার সীমান্তে নতুন করে সংঘাতে আফগানিস্তানে অন্তত আটজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মতে, শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত চলা সংঘর্ষের সময় আফগানিস্তানের অন্তত আটজন নিহত এবং বেসামরিক নাগরিকসহ ১৩ জন আহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার আফগানিস্তানের পূর্ব পাকতিকা প্রদেশে নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ক্যাম্পে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিমান হামলার পর থেকে দুই পক্ষই গুলি বিনিময় করছে।
সংঘাতে পাকিস্তানের এক ফ্রন্টিয়ার কর্পস সৈন্য নিহত হয়েছেন এবং আরও ১১ জন তাজা সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, আফগান জঙ্গিদের পাকিস্তানে অনুপ্রবেশের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর এই সংঘাত শুরু হয়েছিল। এর আগে গত শুক্রবার রাতেও জঙ্গিরা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর জঙ্গিরা আফগান বাহিনীর সাথে যোগ দেয় এবং শনিবার সকালে হালকা ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানি সামরিক পোস্টে গুলিবর্ষণ করে। আফগান বাহিনী এবং জঙ্গিরা দিনব্যাপী সংঘর্ষে পাকিস্তানের ঘোজগড়ি, মাথা সাঙ্গার, কোট রাঘা এবং তারি মেঙ্গল এলাকায় সীমান্ত চৌকি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী আফগান অংশে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি করেছে এবং তাদের সীমান্ত চৌকি ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের জন্য বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বেলুচিস্তানে আফগান জঙ্গিদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কাবুলের কাছে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আফগান সরকারকে টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। এসময় তিনি বলেছিলেন, আফগান মাটি থেকে পাকিস্তানে হামলা পরমাণু অস্ত্রধারী এই দেশটির জন্য একটি “রেড লাইন”। তিনি আরও বলেন, এই ইস্যুতে কাবুলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ইসলামাবাদ, কিন্তু সংলাপ এবং হামলা “একসাথে চলতে পারে না”। আফগান তালেবানরা তাদের দেশে অবস্থানরত টিটিপি সন্ত্রাসীদের ক্রমাগত সমর্থন দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।