যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ দূতাবাস, দোহায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০ পালিত
যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ দূতাবাস, দোহায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০ পালিত
ইউসুফ পাটোয়ারী লিংকন।
১৯ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখ যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ দূতাবাস, দোহা, কাতার কর্তৃক আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০ উদযাপন করা হয়। করোনার প্রাদুর্ভাব থাকায় এ সম্পর্কিত কাতার সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দিবসটি উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) জনাব মোঃ নাজমুল হাসান এর সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়।
এ উপলক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রধান মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত বানী পাঠ করে শুনানো হয়।
এরপর দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান দূতাবাসের কল্যাণমূলক কার্যাবলী ও কর্মী সচেতনতামূলক বিষয়ে শিরোনামে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। উপস্থাপনায় বঙ্গবন্ধুর অভিবাসন দর্শন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং অভিবাসন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক নীতি ও পদ্ধতির প্রতি সমর্থনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক কল্যাণমূলক কার্যাবলী ও কর্মী সচেতনতামূলক বিষয়ে উপস্থাপনা পেশ করা হয় । দিবসটি উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ০৩টি ক্যাটাগরিতে বৈধপথে রেমিটেন্স প্রেরণকারী ৭ জন প্রবাসীকে ক্রেস্ট ও সম্মাননা পত্র প্রদান করা হয়। পুরস্কৃতগণ হলেন- মিসেস আনজুমান আকতার, শেখ মোহাম্মদ আহাদুল ইসলাম, জনাব মোঃ আবদুল কাদের, জনাব মোঃ মজাহারুল ইসলাম, জনাব মোহাম্মাদ হেদায়েত উল্লাহ কবীর, জনাব মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী ও জনাব মোহাম্মদ আজিজুল হক রাসেল। পুরস্কার প্রাপ্তগণের মধ্যে ০২ জন তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। কাতারে প্রথমবারের মতো এ ধরনের সম্মাণনা প্রদানের জন্য তাঁরা দূতাবাসের প্রতি কতৃজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত মোঃ জসীম উদ্দিন, এনডিসি দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে তাঁর বক্তব্যে বিজয়ের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লক্ষ শহীদ ও ০২ লক্ষ মা বোনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে “মুজিববর্ষের আহবান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান” যে স্লোগানটি নির্ধারণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বর্তমানে পৃথিবীর ১৭০টি দেশে প্রায় ০১ কোটি ২০ লক্ষ বাংলাদেশী অভিবাসী কর্তৃক প্রেরিত রেমিট্যান্স বাংলাদেশের জিডিপিতে শতকরা ১২ ভাগ অবদান রাখছে। কাতারে ০৪ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশী কর্তৃক প্রেরিত ০১ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশের মোট রেমিট্যান্সের ২০ ভাগের এক ভাগ বিধায় কাতার প্রবাসী সকল বাংলাদেশীকে সাধুবাদ জানান। বর্তমানে পাসপোর্ট সেবা প্রবাসীদের দোর গোড়ায় নেয়া হয়েছে এবং অনলাইন সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে পাসপোর্ট কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইন হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম বিদেশে চালু হলে কাতার তার প্রথম সারির দেশ হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে মর্মে জানান। সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্ত সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে কাতার প্রবাসী সকল বাংলাদেশীকে তাঁদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার ও আহবান জানান রাষ্ট্রদূত।
কাতারের আমিরের দূরদর্শী নেতৃত্ত্বের কারনে শ্রম আইনের যুগান্তকারী সংস্কার আনার জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত মোঃ জসীম উদ্দিন, এনডিসি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আমরা এগিয়ে চলেছি। বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে যাত্রা রুপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন ও জাতির পিতার সোনার বাংলা স্বপ্ন বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার জন্য তিনি সবাইকে আহবান জানান।
সর্বশেষে দেশ, জাতি, প্রবাসে কর্মরত ও বসবাসকারী বাংলাদেশীদের শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং মৃত্যুবরণকারীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, কাতার বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সর্বস্তরের প্রবাসীগণ উপস্থিত ছিলেন।