• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বাংলাদেশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ঢাকার রাস্তায় সম্পাদকদের নজিরবিহীন মানববন্ধন

প্রকাশ:  ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:২৭ | আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:৩৩
বিবিসি
ঢাকায় সম্পাদকদের মানববন্ধন
প্রিন্ট

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

তারা সংসদের আগামী অধিবেশনেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনী আনার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

কর্মসূচিতে সাত দফা দাবি ঘোষণা করে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, "আগামী সংসদ অধিবেশনে আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হোক"।

সম্পাদক পরিষদের সাত দফার কয়েকটি হলো--ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা সংশোধন, কোন সংবাদমাধ্যমের কম্পিউটার ব্যবস্থা জব্দ করার ক্ষেত্রে আদালতের আগাম আদেশ নেয়ার বিধান চালু করা, তথ্য অধিকার আইনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন কর্মসুচিস্থল থেকে বিবিসির কাদির কল্লোল জানাচ্ছেন, কর্মসূচিতে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের ১৯ সদস্যের মধ্যে ১৭ জন এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

এর আগে আজকের এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মাহফুজ আনাম বলেছেন, "সংসদে এখনো আইনটি সংশোধনের সুযোগ আছে এবং তারা সরকারকে সেটিই বোঝানোর চেষ্টা করছেন"।

এর আগে সম্পাদক পরিষদ ২৯শে সেপ্টেম্বর একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলো।

পরে তথ্যমন্ত্রীর আলোচনার আহবানে সাড়া দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করে তারা ত্রিশে সেপ্টেম্বর সরকারের তিন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টার সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলো।

আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা বাতিল হলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নতুন রূপে তা ফিরে আসছে বলে অভিযোগ গণমাধ্যমকর্মীদের

ওই বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন যে সাংবাদিকরা যে নয়টি ধারা নিয়ে আপত্তি করেছে সেগুলো মন্ত্রীসভায় তোলা হবে এবং সেখানে আলোচনার পর তারা আবারো সম্পাদক পরিষদের সাথে আলোচনা করবেন।

কিন্তু ওই বৈঠকের পর সরকার সংসদে পাশ হওয়া আইনটিই স্বাক্ষরের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণ করেন এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর আইনটি কার্যকর হয়ে যায়।

এ প্রেক্ষাপটে নতুন করে আজকের মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে সম্পাদক পরিষদ।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মাহফুজ আনাম বলছেন, তারা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনায় গিয়েছিলেন আন্তরিকতা প্রকাশ করতে কারণ তারা সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাব যেন একটা সুষ্ঠু আইনের দিকে যাওয়া সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, "সরকার যদি আলোচনার প্রস্তাব দেয় আমরা কেন সেটি গ্রহণ করবো না। সেভাবেই গিয়েছি এবং উনাদের এতো সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিলো। কিন্তু সেই আশায় আমাদের নিরাশ হতে হয়েছে"।

ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, তারা মনে করেন আইনটি সংশোধনের সুযোগ আছে। কারণ সংসদ এখনো বহাল আছে ও সামনে একটি অধিবেশন আছে।

"আমরা মনে করি সরকারের সদিচ্ছা থাকলে, তারা যদি সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করতে না চান তাহলে যৌক্তিকতা দেখেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং গ্রহণযোগ্য একটা আইন আসবে"।

তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে কিন্তু সাংবাদিকের স্বাধীনতা হরণ করা ও বাক স্বাধীনতা হরণ করা দেশের ভবিষ্যত ও গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে না। এতে করে সংবিধানে যে অধিকার দেয়া আছে তারও লঙ্ঘন হবে।

মাহফুজ আনাম বলেন, "আইন হবার পরেও আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া আছে। সেজন্য আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। একটা সুযোগ আছে এখনো সেদিকেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বলতে পারেন এটি সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা"।

 

 

সর্বাধিক পঠিত