অর্থ আত্মসাতের দায়ে যুবদল কর্মী কারাগারে
সোয়ালেহীন করিম চৌধুরীজালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের দায়ে যুক্তরাজ্য যুবদলের কর্মী সোয়ালেহীন করিম চৌধুরীসহ ৭ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ওল্ড বেইলি আদালত এ রায় ঘোষণা করলেও বিষয়টি সম্প্রতি জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুক্তরাজ্য যুবদলের এক নেতা বলেন, ২০১৫ সালে সোয়ালেহীন করিম যুক্তরাজ্য যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হন। এরপর একই বছর তিনি আহ্বায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর যুক্তরাজ্য যুবদলের আর কোনো কমিটি হয়নি। সোয়ালেহীন করিমের দেশের বাড়ি সিলেটের মৌলভীবাজারের রাজনগর থানায়।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সোয়ালেহীনসহ ৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তাদের মধ্যে সোয়ালেহীন (৩৯) করিমকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য তিনজনের মধ্যে শাহ হোসেন আলী (৪৫) ও মইনুল হোসেন (৪১)কে ৪ বছর করে এবং মনির হোসেন (২৫)কে ৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাকি তিন আসামির মধ্যে ডেভিড পেইজকে (৬০) ৭ বছর এবং একই বয়সী নেইল নিউব্যারিকে ৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পিটার (২৫) কোমা পেয়েছেন ১৫ মাসের কারাদণ্ড।
মামলার অভিযোগ, অর্থ জালিয়াতির এই চক্র ২০১৪ ও ২০১৫ সালে প্রতারণার মাধ্যমে মোট ৫ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৫ কোটি টাকা) হাতিয়ে নেয়। স্থানীয় ইংরেজি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সাজাপ্রাপ্তরা পুলিশের পরিচয় দিয়ে সরলমনা লোকদের ফোন করে বলত- তাদের ব্যাংক হিসাব জালিয়াতরা টার্গেট করেছে। তাই তাদের ব্যাংকের সব অর্থ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে দিতে হবে। ফোন পেয়ে আতঙ্কিত ভুক্তভোগীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য জরুরি নম্বর ৯৯৯ এ কল করতেন। জালিয়াত চক্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কল নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ পরিচয়ে কথা বলত। ভুক্তভোগীদের একজন এই চক্রের ফাঁদে পড়ে তাঁর সারা জীবনের সঞ্চয় ২ লাখ ৮৮ হাজার পাউন্ড খোয়ান।
সিসিটিভি থেকে ধারণকৃত এক স্থিরচিত্রে দেখা যায়, সোয়ালেহীন চৌধুরী একটি ব্যাংকে অর্থ তোলার জন্য লাইনে অপেক্ষা করছেন। খবরে বলা হয়, ওই দিন তিনি ২৬ হাজার ৫শ পাউন্ড ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। অপরাধ চক্রের আরেক সদস্য নেইল নিউব্যারি ওই অর্থ তাঁর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছিলেন।
আইনজীবী রোবার্ট হ্যাচিনসন বলেন, এই অপরাধী চক্র অত্যাধুনিক উপায়ে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতো। তাদের নিজেদের মধ্যে বেশ ভালো বোঝাপড়া ছিল। তারা একে অন্যের অ্যাকাউন্টে বড় অঙ্গের অর্থ আদান-প্রদান করতেন।
দোষীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং মোবাইলের খুদে বার্তা বিশ্লেষণ করে তাদের অপরাধের প্রমাণ পায় তদন্তকারীরা। এসব অপরাধীর ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।