হাই তোলা স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী
প্রাচীনকাল থেকে একথা আমারা বিশ্বাস করে আসছি যে হাই ওঠা মানেই ঘুমানোর সিগনাল দিচ্ছে শরীর। কিন্তু এই ধরণা একেবারেই সঠিক নয়।অফিসে জরুরি মিটিং বা কাজের সময়, যাত্রাপথে, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাঝেও অনেক সময় হাই ওঠে। কখনও কখনও হাই তোলার কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়।মজার বিষয় হলো হাই তোলার সঙ্গে ক্লান্তি বা শরীর খারাপের কোনো সম্পর্কই নেই। এমনকি হাই তোলা শরীরের জন্য খারাপ এটা ভাবারও কোনো কারণ নেই।গবেষকরা বলছেন হাই তোলার কিছু স্বাস্থ্যকর দিক রয়েছে। যেমন-
# গবেষণায় দেখা গেছে, হাই তোলা মস্তিষ্কের উত্তেজনা প্রশমিত করে। সেই সঙ্গে মানসিক দক্ষতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। হাই তোলা স্নায়ু তন্ত্রের উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। হাই তুললে মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহ বা রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া হাই তোলার কারণে শরীরে, শিরায়-উপশিরায় অক্সিজেনের ঘাটতি দ্রুত পূরণ হয়।
# হাই তোলার ফলে চোখের পাশের অশ্রুগ্রন্থির উপর চাপ পরে। এতে অক্ষিগোলক পানিতে ভিজে যায়। ফলে চোখ পরিষ্কার হয় এবং একই সঙ্গে দৃষ্টি আরও স্বচ্ছ হয়।
# হাই তুললে শরীরে অনেক বেশি অক্সিজেন প্রবেশ করে। সেই সঙ্গে ফুসফুস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড দ্রুত বের হয়ে যায়।এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সঞ্চালন অনেকটা বৃদ্ধি পায়।
# মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ও অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, হাই তোলা শরীর এবং মস্তিষ্কের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। গ্রীষ্মকালে শরীরের তাপমাত্রা শীতকালের তুলনায় অনেকটা বেড়ে যায়। এ কারণে গ্রীষ্মকালে শীতকালের তুলনায় অনেক বেশি হাই ওঠে।
# হাই তুললে মুখের ও বুকের মাংসপেশী প্রসারিত হয়। দীর্ঘ ক্ষণের শরীরের জড়তা বা আড়ষ্ঠতা কমে যায়।
# বিমান, এলিভেটর বা লিফটে করে উচ্চতায় ওঠার সময় অনেকের কানে ব্যথা, অস্বস্তি ও শ্রবণের নানা রকম সমস্যা হতে হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে হাই তোলার মাধ্যমে। গবেষকরা বলছেন, যখন উচ্চতার দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে, সেই সময় হাই তোলা কানের বায়ুর চাপের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।