ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ
ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দঘন পরিবেশে গতকাল ৯ মার্চ শনিবার চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও আমন্ত্রিত অতিথিসহ সুধীজনদের ব্যাপক উপস্থিতিতে সকাল ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। কলেজের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ ক্রীড়া পতাকা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক মজুমদার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পতাকা উত্তোলন করেন। কলেজের নিজস্ব মাঠে অনুষ্ঠিত এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ভার্চুয়াল উদ্বোধন ঘোষণা করেন কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মীজানুর রহমান। তিনি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সফলতা কামনা করে বলেন, ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজ আজ শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলাসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এই কলেজেরই কৃতী শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। যার লেখাপড়ায় সহযোগিতা প্রদানের দায়িত্ব নিয়েছেন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা সুজিত রায় নন্দী, যাতে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া গ্রহণে আরো বেশি উৎসাহিত হন। তিনি আরো বলেন, মার্চ মাস আমাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন বাঙালি জাতিকে উজ্জ্বীবিত করার জন্য। সেদিনের সেই আহ্বানে বাঙালি জাতি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছিলো। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা এখনো সকল ক্ষেত্রে মুক্তি লাভ করতে পারিনি। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
কলেজের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজের সভাপ্রধানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ দেশ গঠনে যারা অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজ অত্র এলাকার গর্ব। কলেজটি উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনবদ্য অবদানের কথা আমরা আজীবন কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণে রাখবো। তিনি কলেজ প্রতিষ্ঠায় তার পরিবারের অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন ৩ একর সম্পত্তির উপর কলেজটি গড়ে উঠেছে। যার ৩৯ শতাংশ জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড দাবি করলেও বাদবাকী সম্পত্তি আমাদের পরিবারের। অত্র এলাকার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই গড়ে উঠেছে আমাদের পরিবারের সম্পত্তির উপর। তিনি আঃ মান্নান, সুরেষ চন্দ্র রায়, ক্ষিতিষ চন্দ্র মজুমদার, নবীন চন্দ্র রায় নন্দী, শামসুদ্দিন পাটোয়ারীসহ যারা কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আমরা এদেরকে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করেছি। তিনি অতীতকে ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে বলেন, যে অতীতকে ভুলে যায় তারা অকৃতজ্ঞ। কলেজের উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যারা পর্দার অন্তরালে কাজ করছেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সত্য জানুন এবং ন্যায় সঙ্গত কথা বলুন। তিনি মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে যাতে কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে না পারেন সেজন্য সকলকে সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি আরো বলেন, আমাদের চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমাদের পরিবার সকল সময়ই চেষ্টা করেছে শিক্ষা বিস্তারে কাজ করতে। সেই লক্ষ্যেই আমাদের পরিবার অনেক সম্পত্তি রেজিস্ট্রি দলিল করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দান করে দিয়েছে। এমনকি রেজিস্ট্রি করার খরচটুকু পর্যন্ত আমি নিজে দিয়েছি। তিনি শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, আজ সকল ক্ষেত্রেই চলছে প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে তোমাদেরকে শিক্ষা, খেলাধুলা, সংস্কৃতি সকল ক্ষেত্রেই সমান মনযোগী হতে হবে, নিজেকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে, দেশপ্রেমিক নাগরিক হতে হবে। তিনি ফরাক্কাবাদে একটি ফুটবল ও ক্রিকেট একাডেমী গড়ে তোলারও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আগে লেখাপড়া পরে রাজনীতি। তোমরা প্রধানমন্ত্রীর এই কথা স্মরণ রাখতে চেষ্টা করবে।
কলেজের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অতিথিদের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রব ভূঁইয়া, ভূমিদাতা অঞ্জন রায় নন্দী, অজিত রায় নন্দী, শিক্ষানুরাগী সেলিম পাটোয়ারী, অভিভাবক সদস্য মোঃ ইব্রাহিম খান, হিতৈষী সদস্য মোঃ হারুনুর রশিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ চন্দ্র দাস।
অনুষ্ঠানে অঞ্জন রায় নন্দী কলেজের উন্নয়নে এক একর সম্পত্তির দানকৃত রেজিস্ট্রি দলিল কলেজ প্রতিষ্ঠাতা সুজিত রায় নন্দীর হাতে তুলে দেন।