হাইমচরে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ ৫ জনকে আসামী করে অভিযোগ
হাইমচরে মাকসুদা আক্তার লিজা (১৯) নামের ৭ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ৩টায় আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের গণ্ডামারা গ্রামে তার স্বামী পারভেজ রাড়ীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সকাল ৭টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠায়। ময়না তদন্ত শেষে লিজাকে তার বাপের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
গৃহবধূ মাকসুদার বাবা মোসলেম ছৈয়াল বাদী হয়ে স্বামী পারভেজ রাড়ী, শ^শুর ফারুক রাড়ী, শাশুড়ি ফাতেমা বেগম, ননদ ফারজানা বেগমসহ ৫ জনকে আসামী করে হাইমচর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
সরজমিনে জানা যায়, গত দেড় বছর পূর্বে গণ্ডামারা এলাকার ফারুক রাড়ীর ছেলে পারভেজের সাথে রায়পুর উপজেলার চরআবাবিল এলাকার মোরশেদ ছৈয়ালের একমাত্র মেয়ে মাকসুদা আক্তার লিজার ইসলামি শরীয়া মোতাবেক বিবাহ হয়। বিবাহের কিছুদিন পর জানতে পারা যায়, স্বামী পারভেজ মাদকাসক্ত। সে নেশায় আসক্ত হয়ে প্রায় মাকসুদার ওপর নির্যাতন করতো। বিষয়টি পারভেজের বাবা, মা, ননদ, ননদের স্বামীকে জানালে তারা পারভেজকে কোনো রকম শাসন না করে উল্টো মাকসুদাকে গালমন্দ করতে থাকে। মাকসুদার পিতা মেয়েকে স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচাতে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে ১৫ দিন আগে স্বামী পারভেজ মেয়ে মাকসুদাকে জোর করে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে নিয়ে আসার পর মাকসুদার ওপর আরও বেশি নির্যাতন চালায় পাষণ্ড স্বামী। সর্বশেষ গত ১৯ মে সন্ধ্যায় স্বামী, শ^শুর, শাশুড়ি, ননদ ও ননদ জামাইসহ বাড়ির লোকজন গৃহবধূ মাকসুদাকে মারধর করে এবং আত্মহত্যা করার জন্যে প্ররোচনা দেয়। ওইদিন রাতেই মাকসুদা কষ্ট সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করে।
মাকসুদার বাবা জানান, আমার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর থেকে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন বিভিন্নভাবে অত্যাচার করতো। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ে আমার বাড়িতে চলে এসেছিল। আমার মেয়ের গর্ভে ৭ মাসের সন্তান ছিলো। মেয়েটাকে মেরে ফেলার জন্যেই আমার বাড়ি থেকে জোর করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারা মেয়েটাকে বাঁচতে দিলো না। মেয়েটাকে মেরেই ফেললো। আমি তাদের বিচার চাই। আমি ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে থানায় তাদেরকে আসামী করে একটি অভিযোগ দিয়েছি। আমি তাদের শাস্তি দেখে যেতে চাই।