মৈশাদী ‘পাটোয়ারী পরিবারে’র মিলনমেলা
‘এসো মিলি প্রাণের টানে’ স্লোগানে চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদীর ঐতিহ্যবাহী নসর উল্লাহ পাটোয়ারী বাড়িতে ‘পাটোয়ারী পরিবারের মিলনমেলা ২০২৩’ দিনব্যাপী আনন্দঘন পরিবেশে এবং স্মৃতি চারণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে গত ২০০ বছর পূর্ব থেকে এই বাড়িতে বসবাসকারী প্রজন্মের বংশ পরিক্রমায় জীবিত প্রবীণ ও নবীন সদস্যরা মিলিত হন।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়ির প্রয়াত ব্যক্তিদের কবর জিয়ারত ও রুহের মাগফিরাত কামনায় শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। দোয়া পরিচালনা করেন বাড়ির প্রবীণ ব্যাক্তি আলহাজ¦ অধ্যাপক হাফেজ মোঃ বশির উল্লাহ। এরপর জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত পাটোয়ারী পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠাস্থলে উপস্থিত হন। তাদেরকে স্বাগত জানান মিলনমেলা উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিকসহ অন্য সদস্যরা। সকালের নাস্তা পর্বে অংশগ্রহণ করেন আড়াই শতাধিক সদস্য।
বাড়ির সামনে প্রতিষ্ঠিত বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয় পাটোয়ারী পরিবারের ২শ’ বছর পূর্ব থেকে প্রজন্মের পরিচিতি পর্ব। এটি পাঠ করেন মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম পাটোয়ারী। এরপর আসে আবেগঘন পর্ব স্মৃতিচারণ।
স্মৃতিচারণ পর্বে মঞ্চে মিলিত হন প্রবীণ ভাই-বোনেরা। তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আলহাজ¦ অধ্যাপক হাফেজ মোঃ বশির উল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী বীর প্রতীক, কুলসুমা বেগম (খুশু), মোঃ আবিদ উল্যাহ পাটওয়ারী, শামীম আখতার, পি জহির উল্যাহ (বাদল), ফজিলাতুন্নেছা, মোঃ নূরুল ইসলাম পাটোয়ারী, অধ্যক্ষ শাহ্ মোঃ জালাল উদ্দিন, মনিরা বেগম, ফাতেমা বেগম, জাহান আরা বেগম, নূর আক্তার, নেয়ামত উল্লাহ পাটোয়ারী, চাঁদ সুলাতানা, মোঃ মহসীন পাটোয়ারী, মোহাম্মদ মাইনুদ্দীন, সালেহ আঞ্জুম পাটোয়ারী, নূর জাহান বেগম, মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ, ফরিদ আক্তার, সেলিনা আক্তার, আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ পাটওয়ারী, খালেদা জিন্নত, মোঃ রাশেদ উল্যাহ পাটোয়ারী ও অধ্যক্ষ মোঃ মোশারফ হোসেন।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে অনেকেই ছোটবেলার নানা ঘটনার বর্ণনা করেন। এর মধ্যে কয়েকজন তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন পাটোয়ারী বাড়ির সামাজিক ভূমিকার কথা। এই বাড়ি থেকে চাঁদপুরে প্রথম ইউনিয়ন পর্যায়ে মৈশাদী ইউনিয়নকে ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়। বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী ও তাঁর ভাই চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম পাটোয়ারী ১০ বছর এলাকার গরীব লোকদের নিয়মিত সহযোগিতা করে ভিক্ষাবৃত্তিমুক্ত করেন। পরবর্তীতে চাঁদপুর জেলায় ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা হিসেবে এটিকে মডেল রূপে গ্রহণ করা হয়।
স্মৃতিচারণ শেষে পাটোয়ারী পরিবারের নবীনদের হাত থেকে প্রবীণরা সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন। এছাড়া উদ্যাপন কমিটির পক্ষ থেকে পরিবারের কৃতী ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
এছাড়াও দিনব্যাপী এ মিলনমেলায় নবীন-প্রবীণদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন খেলাধুলা এবং সর্বশেষ বীর প্রতীক মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী একাডেমির শিক্ষার্থীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।