প্রি-পেইড মিটারের জন্যে নতুন ভোগান্তি!
মিটার প্রতি গ্রাহককে গুণতে হচ্ছে ছয় হাজারেরও বেশি টাকা


প্রি-পেইড মিটারের ভোগান্তি যেনো শেষই হচ্ছে না। পিডিবি কয়েক বছর যাবৎ পূর্বের মিটার পরিবর্তন করে এক প্রকার জোর করেই গ্রাহকদের মিটার প্রি-পেইডে রূপান্তর করে। প্রি-পেইড মিটারে রূপান্তরের পর নানা রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে গ্রাহকরা সেটি মেনে নিয়েছেন বাধ্য হয়েই। মিটারে টাকা রিচার্জ করা, দীর্ঘ নাম্বার সম্বলিত পিন দেয়া, লক হওয়া, মিটারের ব্যাটারি নষ্ট হওয়াসহ নানা রকম ভোগান্তি গ্রাহকদের পোহাতে হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় গ্রাহক হয়রানিসহ নানা রকম সংবাদ প্রকাশিত হয়। কোনো গ্রাহকের মিটারের ব্যাটারি নষ্ট হলে গ্রাহক ভেদে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা খরচ করে ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয়। এ সকল প্রতিটি ক্ষেত্রে টাকা খরচের ক্ষেত্রে হয়রানিতো লেগেই আছে।
নতুন করে আবার যুক্ত হয়েছে যে সমস্ত গ্রাহক এখনো প্রি-পেইডে রূপান্তর হয়নি তাদেরকে প্রি-প্রেইড করার জন্য প্রায়ই অফিস থেকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। কোনো গ্রাহকের বকেয়া বিল পরিশোধ বা অন্য কোনো কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে পুনরায় সংযোগ দিতে গেলে এক প্রকার বাধ্য করা হয় প্রি-পেইড সংযোগ প্রদান করার জন্যে। আবার কোনো কোনো গ্রাহকের কাছ থেকে লিখিতভাবে প্রি-পেইড মিটারে রূপান্তরের শর্ত সাপেক্ষে সংযোগ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়া জনৈক গ্রাহক জানান, করোনাকালীন সময়ে বিল না পাওয়ায় তিনমাসের বিল বকেয়া হলে বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারীর প্রকৌশলী মুকতাদিরসহ লাইনম্যানরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ওই গ্রাহক তখন তাদের জানান যে, আমরাতো বিল পাইনি, পরিশোধ করবো কীভাবে? তারপর তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অফিসে যেতে বলেন। ওই গ্রাহক অফিসে গিয়ে সেদিনই বিল পরিশোধ করে বিলের কপিসহ অফিসে যোগাযোগ করলেও ২-৩ দিন পর পুনঃসংযোগ ফি জমা সাপেক্ষে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। কিন্তু তাকে মিটার পরিবর্তন করে এক সপ্তাহের মধে প্রি-পেইড মিটার করতে হবে মর্মে লিখিত রাখেন।
ওই গ্রাহককে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন জানান, মিটার পরিবর্তন করে প্রি-পেইড মিটার করতে আপনাকে মিটার কিনে দিতে হবে, নতুবা প্রি-পেইড মিটার করা যাবে না। গ্রাহক যখন জিজ্ঞেস করলেন মিটার কিনতে কত টাকা খরচ হবে তখন তারা জানায় ৬ হাজারের বেশি টাকা খরচ হবে। পূর্বে ফ্রি মিটার দেয়া হলেও এখন কিনতে হবে কেনো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন মিটার বরাদ্দ নেই। তাই আপনাকে কিনতে হবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে ফোন করলে তিনি জানান যে, আমরা প্রি-পেইড মিটার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে পত্র পাঠিয়েছি। এখনও আমাদের চাহিদা মোতাবেক মিটার সরবরাহ করেনি। যদি চাহিদা মোতাবেক মিটার পেয়ে যাই তবে আবার আমরা বিনামূল্যে দিতে পারবো। তবে এখন যদি প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করতে হয় তাহলে চারটি কোম্পানীর প্রি-পেইড মিটার নির্ধারণ করা আছে, সেখান থেকে ক্রয় করতে হবে। আর প্রতিটি প্রি-পেইড মিটার কিনতে ৬ হাজার টাকারও বেশি খরচ হবে।
ভুক্তভোগীরা জানান, সরকার যেহেতু মিটার বিনামূল্যে দিচ্ছে তাহলে কেনো কিনতে হবে। আর কিনে মিটার লাগালে আর্থিক বিষয়ের সাথে ভবিষ্যতে গ্রাহককে অন্যান্য ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। তাই গ্রাহকদের দাবি, যদি প্রি-পেইড মিটার করতেই হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে যেনো পূর্বের ন্যায় প্রি-পেইড মিটার সরবরাহ করা হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রি-পেইড মিটার না আসা পর্যন্ত যেনো আমাদেরকে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের চাপ দেয়া না হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।