লকডাউন চলাকালীন পুরাণবাজারে আরও দুটি ব্যাংকের লেনদেন শুরু


বাণিজ্যিক বন্দর চাঁদপুর পুরাণবাজারে আরও দুটি ব্যাংক শাখার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সারাদেশে গত ৫ এপ্রিল ভোর হতে ১১ এপ্রিল ভোর পর্যন্ত শুরু হয় লকডাউন। পরবর্তীতে এক সপ্তাহের জন্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয় ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। তা শেষ হতে না হতে পুনরায় জননিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে মানুষের সুরক্ষায় সরকার চলমান লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করার লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খোলা রাখা হয় ব্যাংকিং কার্যক্রম। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জেলা, উপজেলা পর্যায়ে প্রধান শাখাসমূহ খোলা থাকলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে থাকা ব্যাংকের একাধিক শাখা বন্ধ রাখা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় লকডাউন শুরুর প্রথম থেকেই আমদানিনির্ভর পুরাণবাজারে বন্ধ রাখা হয় সোনালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংকের শাখাসমূহ। একমাত্র খোলা থাকতে দেখা যায় অগ্রণী ব্যাংকের একটি শাখা। একটি মাত্র ব্যাংকের কার্যক্রম চালু থাকায় ব্যবসায়ীদের ব্যাংকিং লেনদেনে দেখা দেয় স্থবিরতা। তারা লকডাউনের কারণে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে নতুনবাজারে খোলা থাকা ব্যাংকের প্রধান শাখায় লেনদেন করতে হয়। এতে তাদের যেমন সময়ের অপচয় হয়, তেমনি জনবলেরও প্রয়োজন দেখা দেয়। এ বিষয় নিয়ে গত ২১ এপ্রিল বুধবার দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়। যাতে ব্যবসায়ীদের লেনদেনের ক্ষেত্রে অসুবিধার চিত্র ফুটে উঠে।
গতকাল ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পুরাণবাজার গিয়ে দেখা যায়, লকডাউনে খোলা থাকা পুরাণবাজার অগ্রণী ব্যাংক শাখার পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক পুরাণবাজার শাখাও খোলা রাখা হয়েছে। এসব শাখায় লেনদেন করছেন গ্রাহকগণ। ব্যাংকের এ কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম। তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বন্ধ রাখা ব্যাংক শাখাসমূহের কার্যক্রম পুনরায় চালু হওয়ায় পুরাণবাজারে অবস্থানরত ব্যবসায়ীদের লেনদেনে ব্যাপক সুবিধা হবে। আপনারা জানেন, লকডাউনের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের পাইকারগণ বাজারে আসতে কিছুটা দেরি হয়। এ কারণে আমদানিকৃত অর্থ নতুনবাজারে গিয়ে ব্যাংকে লেনদেন করতে ব্যবসায়ীদের অনেকটা সমস্যা ও কষ্ট পোহাতে হয়। বর্তমান সময় ব্যবসায়ীদের অনেকেই ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেন। ফলে লোকাল ব্যাংকের শাখাসমূহ বন্ধ রাখা হলে ব্যবসায়ীদের সমস্যায় পড়তে হয়। তিনি পুরাণবাজারে যে সকল ব্যাংকের শাখাসমূহ বন্ধ রাখা হয়েছে তা খোলা রাখার জন্যে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ব্যাংক বন্ধ রাখার পর পুনরায় খোলা রাখার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় সোনালী ব্যাংক পুরাণবাজার শাখার ম্যানেজার মোঃ কবির হোসেন ফরাজির নিকট। তিনি জানান, প্রধান কার্যালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী চাঁদপুর প্রিন্সিপাল অফিসের নির্দেশনায় গ্রাহকদের সুবিধার্থে রোস্টারিং পদ্ধতিতে ব্যাংকের এই শাখা খোলা রাখা হয়েছে। আমরা গ্রাহকদের সেবা প্রদানে আগ্রহী। কিন্তু আমরা চাইলেই সবকিছু করতে পারি না। আমাদেরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। লকডাউন চলাকালীন রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহ ৩ দিন এ শাখায় বিল প্রদান থেকে শুরু করে সকল প্রকার লেনদেন করা যাবে। একই কথা বললেন পুরাণবাজার জনতা ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মোঃ মহিউদ্দিন পলাশ। তবে কৃষি ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক পুরাণবাজার শাখা খোলা রাখতে দেখা যায়নি। লকডাউনের কারণে সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ব্যাংকিং লেনদেন চালু থাকবে বলে জানা যায়। আর অফিসিয়াল কার্যক্রম চালু থাকবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।