হাজীগঞ্জে বৃদ্ধা হত্যার ঘাতক পুত্রবধূ


হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁও গ্রামের সূত্রধর বাড়িতে বিধবা মনোরমা সূত্রধর (৬০) হত্যার ঘটনায় একমাত্র ছেলের স্ত্রী শিবানী সূত্রধর (৩০) শাশুড়িকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। থানা পুলিশের ব্যাপক জেরার মুখে হত্যাকা-ের মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে সে মুখ খুলতে বাধ্য হয়। এ ঘটনায় হত্যাকা-ের শিকার মনোরমা সূত্রধরের বড় মেয়ে পুতুল রাণী সূত্রধর বাদী হয়ে ভাইয়ের স্ত্রীকে একমাত্র আসামী করে গতকাল শুক্রবার হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে মনোরমা সূত্রধরের লাশ ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে পারিবারিক শ্মশানে দাহ করা হয়। মনোরমা সূত্রধর ওই বাড়ির মৃত হরেন্দ্র সূত্রধরের স্ত্রী। শাশুড়ির খুনি শিবানী রাণী সূত্রধর উক্ত দম্পতির ছেলে গৌরাঙ্গ সূত্রধরের স্ত্রী। গৌরাঙ্গ-শিবানী দম্পতির নাবালক দুটি ছেলে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনোরমা সূত্রধর মারা যাওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলতে শুরু করে এ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের পরিবারে বউ শাশুড়ির মধ্যে প্রায় সময়ই কলহ লেগে থাকতো। এসব বিষয় নিয়ে পুত্রবধূ শিবানী এর আগেও শাশুড়িকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো। সে ঘটনায় নিহতের বড় মেয়ে সে সময় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে শাশুড়ির লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার সময় নিহতের একমাত্র ছেলে গৌরাঙ্গ ও ছেলের স্ত্রী শিবানীকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে শিবানী জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সে একাই প্রথমে শাশুড়িকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এর পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শাশুড়িকে হত্যার অনেক পরে তার স্বামী গৌরাঙ্গ কাজ থেকে বাড়িতে আসে। এমন বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে গৌরাঙ্গকে পুলিশ ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, বউ-শাশুড়ির বনিবনা ছিলো না বহুদিন ধরে। এই দুই নারীর পারিবারিক কলহ প্রায় দিন হতো। এতে করে উভয়ে উভয়ের উপর ক্ষুব্ধ ছিলো। কিন্তু পুত্রবধূ হয়ে শাশুড়িকে একেবারে মেরেই ফেলবে এটা কেউ ভাবতেই পারেনি।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারুনুর রশিদ জানান, শাশুড়িকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে এই নারী। অপর এক প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বড় মেয়ে পুতুল রাণী সূত্রধর তার ভাইয়ের স্ত্রী শিবানী রাণী সূত্রধরকে একমাত্র আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, ৩ সন্তারের জননী বিধবা মনোরমা সূত্রধর ২ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ছেলে ও ছেলের বউসহ থাকতেন স্বামীর ভিটায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বাড়ির ও স্থানীয়রা এই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগসহ মৃত অবস্থায় বাড়ির পাশে দেখতে পান। খবর পেয়ে রাতেই হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হারুনুর রশিদ নিহতের বাড়িতে যান। রাতে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।