শাহরাস্তিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
শাহরাস্তিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
ইউসুফ পাটোয়ারী লিংকন
চাঁদপুর শাহরাস্তিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলা অডিটোরিয়াম হল রুমে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জহিরুল ইসলাম এর সাবলীল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে টেলিকনফারেন্সে মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্বের জীবন্ত কিংবদন্তী, ১ নং সেক্টর কমান্ডার, ৯০-৯১ তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, সাবেক সফল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরষ্কার ২০১৯ এ ভূষিত, শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জের উন্নয়নের রূপকার চাঁদপুর-৫ শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জের নির্বাচনীয় এলাকার সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি মহোদয়, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলনে শাহরাস্তি প্রসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্বা কাজী হুমায়ূন কবির।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তারের সভাপতিত্বে অমর একুশের তাৎপর্যের উপর আলোচনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তোফায়েল আহম্মেদ ইরান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নাহার কাজল, শাহরাস্তি অফিসারস ইনচার্য ওসি আব্দুল মান্নান, উপজেলা প্রকৌশলী রেজওয়ানুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফুর রহমান।
আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবীবা মীরাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, স্থানীয় সুধীজন এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে উপজেলা বিভিন্ন সড়কে প্রভাত ফেরী বের হয়। একুশের সেই দেহ-মন শিহরিত গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি আকাশ-বাতাস মুখরিত করে সকলে খালি পায়ে প্রভাত ফেরীতে অংশ নেয়। সকলে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, অফিস আদালত এমনকি অনেকে নিজস্ব বাসা-বাড়িতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করে।
এছাড়া একুশের প্রথম প্রহর ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে শাহরাস্তি উপজেলা শহীদ মিনার বেদীতে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে, কিন্ত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় পুষ্পমাল্য অপর্ণের ক্ষেত্রে প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ জন প্রতিনিধি একসাথে শহিদ মিনারে গমন করেন । প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষ শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, স্বাস্থ্য বিভাগ, পৌর পরিষদ, মেহে ডিগ্রী কলেজ, মহিলা কলেজ, শাহরাস্তি প্রেসক্লাবসহ আরো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে।
স্থানীয় এমপি মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা বাঙালি জাতি, আমাদের মাতৃভাষা হচ্ছে বাংলা। তাই ২১ ফেব্রুয়ারি হচ্ছে আমাদের শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ দিনটিকে আমরা শ্রদ্ধার সাথে পালন করি। তিনি বলেন, একুশ নিয়ে কথা বললে প্রথমে উঠে আসে ৫২-এর ভাষা আন্দোলনের কথা। ১৯৫২ সালের এ দিনে মাতৃভাষার জন্য সালাম, রফিক, জব্বার ও বরকতের মতো অসংখ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ বাংলা ভাষা। তাই আমরা এখন বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি। তিনি বলেন, একুশ হচ্ছে বাঙালি জাতির প্রাণের শব্দ। তাই এ দিনটিকে প্রতিটি ক্যালেন্ডারে লাল দাগ দিয়ে রাখা হয়। আলোচনা সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।