চাঁদপুরে করোনার আতঙ্ক কমলেও বেড়েছে অসচেতনতা

সারাদেশে দিন দিন কমছে করোনা মহামারির আতঙ্ক। এর কারণ করোনা আক্রান্তের হারের নিম্নগতি ও টিকা কার্যক্রমের সূচনা হওয়া। চাঁদপুরেও পূর্বের তুলনায় কমেছে সংক্রমণের হার। কিন্তু এই সংক্রমণ একেবারেই যে কমেছে তা কিন্তু নয়। গত ১০ দিনে চাঁদপুরে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। তাই করোনা সংক্রমণ রোধে এখনো সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। রাষ্ট্রীয়ভাবে এ কথা বারবার প্রচার করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ কমায় জনজীবনে অনেকটা স্বস্তি এলেও বেড়েছে অসচেতনতা। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচল করছে। জনসমাগম হচ্ছে বহু স্থানে। প্রতিদিনের রাস্তাঘাট, অফিসসমূহের চিত্র দেখে মনে হবে_ করোনা দেশ থেকে একেবারেই নির্মূল হয়ে গেছে।

সরেজমিনে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে গত তিনদিনে দেখা গেছে, করোনা থেকে সুরক্ষার জন্যে মাস্ক ব্যবহারের গুরুত্ব অনুধাবন হলেও প্রয়োগে উদাসীন সাধারণ মানুষ। হাট-বাজার থেকে শুরু করে অফিস-আদালত সর্বত্রই মাস্কবিহীন মানুষের অবাধ চলাচল হচ্ছে। 'নো মাস্ক নো সার্ভিস, নো মাস্ক নো এন্ট্রি'_এমন সতর্কতামূলক নির্দেশনা প্রায় সব অফিস আদালত বা জনসমাবেশ স্থলে দেখা গেলেও এর কার্যকারিতা অনেকটাই নেই।

গত কয়েকমাস আগেও করোনা মোকাবেলায় মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে মাঠে ছিলো প্রশাসন। সম্প্রতি করোনা-আতঙ্ক কমায় এ কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। মাস্কবিহীনদের উদাসীনতায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ। তারা মনে করেন, মাস্ক ব্যবহার না করলে অন্যরা সহজে সংক্রমিত হবে। এজন্যে করোনা মহামারী দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

সার্বিকভাবে করোনা সংক্রমণ কমলেও তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রয়োজন রয়েছে বলে স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের আইটি কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন বলেন, করোনা রোধে শুরু থেকেই মাস্ক পরার ওপর জোর দিয়ে আসছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এখন অনেককেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যাচ্ছে না। এটি রোধ করতে হবে।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার কোনো উপায় নেই। অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ জানান।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, মাস্ক ব্যবহার ছাড়া করোনা প্রতিরোধ সম্ভব নয়। মাস্ক ব্যবহারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। মানুষ যাতে মাস্ক ব্যবহার করে এজন্যে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রেখেছি। বর্তমান সময়ে করোনার টিকা দেয়া শুরু হলেও মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে করোনা টিকার কোনো সম্পর্ক নেই। করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন গ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্যে তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনার টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার মন্ত্রীসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে মাস্ক ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্কটা ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক পড়া, হাত ধোয়া অব্যাহত রাখতে হবে। সকলকে সাবধানে থাকতে হবে। টিকা যারা নিয়েছেন তাদেরকেও এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।