• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

শহরে ৭৮৬ অবৈধ পানির সংযোগ চিহ্নিত

চাঁদপুর পৌরসভা বছরে আড়াই কোটি টাকা পানি খাতে ভর্তুকি দেয়

সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে নিজেদের ব্যয় নিজস্ব আয় থেকে করতে হবে : মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল

প্রকাশ:  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

'দেশের অধিকাংশ পৌরসভায়ই পানি খাতটি আয়ের একটি খাত। অথচ চাঁদপুর পৌরসভার এ খাতটি একটি লোকসানের খাত হিসেবে চলে আসছে। এ খাত থেকে আমাদের আয় দূরের কথা, বছরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আর পানির বিল গড়ে সবসমান এমন নিয়মও চলতে পারে না।'

চাঁদপুর পৌরসভায় দীর্ঘদিন চলে আসা কিছু অব্যবস্থাপনা এবং সিস্টেম লসের কথা এভাবেই সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরলেন পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল। এর মধ্যে পানি শাখা অন্যতম। তিনি পানির লাইন অবৈধ সংযোগের বিষয়টিও উপস্থাপন করেন। গত সোমবার তিনি চাঁদপুর প্রেসক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন।

মেয়র জানান, চাঁদপুর পৌরসভা বছরে পানি শাখায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়। অথচ এটি হওয়ার কথা আয়ের একটি খাত। কেনো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কী? এর পেছনে কাজ করতে গিয়ে আমরা প্রথমে অবৈধভাবে সংযোগ নেয়া হয়েছে এমন গ্রাহক চিহ্নিত করলাম। প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টিতে ৭৮৬টি অবৈধ সংযোগ পাওয়া গিয়েছে। ২৬৪০টি পরিবার এসব অবৈধ সংযোগ থেকে পানি ব্যবহার করছে। ওয়ার্ডভিত্তিক এই সংখ্যা হচ্ছে ১নং ওয়ার্ড সংযোগ ৬৮টি, পরিবার ২০১; ২নং ওয়ার্ড সংযোগ ২৫৬টি, পরিবার ২১; ৩নং ওয়ার্ড সংযোগ ১৫৪টি, পরিবার ৯৫; ৪নং ওয়ার্ড সংযোগ ৫৯টি, পরিবার ১৩০; ৫নং ওয়ার্ড সংযোগ ৮৪টি, পরিবার ৯; ৬নং ওয়ার্ড সংযোগ ৩টি, পরিবার ৮০; ৭নং ওয়ার্ড সংযোগ ১৪টি, পরিবার ২৩; ৮নং ওয়ার্ড সংযোগ ১টি, পরিবার ২৭৬; ৯নং ওয়ার্ড সংযোগ ৫০টি, পরিবার ২৯১; ১০নং ওয়ার্ড সংযোগ ১৫টি, পরিবার ২২৯; ১১নং ওয়ার্ড সংযোগ ১৬টি, পরিবার ৩০৩; ১২নং ওয়ার্ড সংযোগ ১৮টি, পরিবার ৫৬৬; ১৩নং ওয়ার্ড সংযোগ ৪টি, পরিবার ৯২; ১৫নং ওয়ার্ড সংযোগ ৪৪টি, পরিবার ২২৪।

এদিকে এমন বড় ধরনের অবৈধ কাজ বছর বছর ধরে চলে আসলেও বিগতদিনে পৌর কর্তৃপক্ষের নজরেই আসেনি বিষয়টি। কোনো তদারকি না থাকাতেই মূলত এভাবেই বিভিন্ন খাতে চরম অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বছর বছর চলে আসছে এ পৌরসভায়। পানি শাখায় আরো একটি অনিয়ম হয়ে এসেছে বিগত দিনে। তা হচ্ছে- রিপেয়ারিং কাজ বাইরের ঠিকাদার দিয়ে করানো। বর্তমান পৌর পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরসভার লোক দিয়েই রিপেয়ারিং কাজ করাবে। তাতে বছরে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। এ বিষয়গুলো নজরে না আনাতেই পানি খাতে বছরে আড়াই কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হতো পৌরসভাকে। তাছাড়া পানির বিলের মধ্যেও সামঞ্জস্য নেই। দেখা গেছে যে, একটি টিনের ঘরের পানির বিলও একশ' টাকা, একটি এপার্টমেন্টের পানির বিলও একশ' টাকা। এটি কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই যেগুলো এপার্টমেন্ট তথা বহুতল ভবন, সেগুলোর পানির বিল বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা করছে বর্তমান পৌর পরিষদ। এ প্রসঙ্গে মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে নিজেদের ব্যয় নিজস্ব আয় থেকে করতে হবে।

পানির অবৈধ সংযোগের বিষয়ে অফিসিয়াল সিদ্ধান্তের কথা জানতে চাইলে সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, আমরা তাদেরকে বিলের আওতায় নিয়ে আসবো এবং জরিমানাসহ বিল তাদের কাছে পাঠিয়ে দেবো।

সর্বাধিক পঠিত