হাজীগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারে আগুন লেগে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন। দুটি গোডাউনসহ ৩ তলা কাঠের ঘর ও অপর দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনের তীব্রতায় পাশের ৫তলা ভবনের একপাশের পুরো দেয়ালসহ অপরপাশের বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনের অংশ তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোববার ভোররাতে ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জ পূর্ব বাজারস্থ বোয়ালজুরি খালের উপর নির্মিত হাজীগঞ্জ সেতুর পূর্ব পাশের চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে। এ ঘটনায় হাজীগঞ্জ দমকল বাহিনী তাদের দায়িত্বে সময়ক্ষেপণ করায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
আগুনে তিনতলা ভবনে থাকা কাঠগোলা এন্ড ফার্নিচার ও ফারিহা ফার্নিচার নামক দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দুটি প্রতিষ্ঠানের গোডাউন পুড়ে গেছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানের শো-রুম, নগদ ৬ লাখ টাকা, গোডাউনে মজুদ থাকা বহু দামী কাঠসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী কাঠগোলা এন্ড ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান জানান, এদিন ভোর রাতে ফারিহা ফার্নিচারের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। দোকানগুলোতে কাঠ ও দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে মুহূর্তের মধ্যে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। রাতে আগুন দেখে প্রত্যক্ষদর্শীসহ দোকানে থাকা কর্মচারীরা টের পেয়ে ডাকচিৎকার দিলে চারদিক থেকে মানুষজন ছুটে আসে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে রাতেই হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়াসহ ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রায় ৩ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে দুটি শো-রুমের ও গোডাউনে থাকা সেগুন কাঠের স্তূপসহ সকল মালামাল, নগদ ৬ লাখ টাকা, ভূমির দলিলপত্রসহ সবকিছু পুড়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত ফারিহা ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী মোঃ খোকন মিয়া জানান, তার শো-রুম, মজুদকৃত মালামাল ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল, প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়াও পুড়ে যাওয়া তিনতলা দোকান-ঘরটির মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
এদিকে রোববার সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহবুব উল আলম লিপন, হাজীগঞ্জ বাজারের সাবেক সভাপতি রোটাঃ আহসান হাবীব অরুণ, সাধারণ সম্পাদক হায়দার পারভেজ সুজন, ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ইমাম হোসেনসহ অন্যরা। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সময়ক্ষেপণকে দায়ী করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা আরো জানান, হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও তারা অনেক পরে গিয়ে পানি দেয়া শুরু করে।
হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসও মোঃ জাকির হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগে (শর্ট সার্কিট) আগুনের সূত্রপাত। তিনি বলেন, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি ও কচুয়াসহ ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সময় ক্ষেপণের বিষয় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগের বিষয়ে এই কর্মকর্তা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ সত্য নয়, কারণ আমরা কোন্ সময় গিয়েছি, কখন থেকে পানি দেয়া শুরু করেছি তার সবটারই ভিডিও রয়েছে আমাদের কাছে।