চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানকে বিদায় সংবর্ধনা
চাঁদপুরে অসাধারণ মেধাসম্পন্ন সাংবাদিক রয়েছেন, যা অন্য কোনো জেলায় দেখতে পাইনি


চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানকে বদলিজনিত বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। গতকাল ২৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তাঁকে এ বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়। এ সময় সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসককে ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ ক্রেস্ট এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের যে কোনো জেলার তুলনায় চাঁদপুরের সাংবাদিকরা অনেক বেশি মেধাবী এবং পরিশ্রমী। এখানে অনেক মেধা, যোগ্যতা, প্রাজ্ঞতা, কর্মদক্ষ ও প্রতিভাবান সাংবাদিক রয়েছেন। যা অন্য কোনো জেলায় দেখতে পাইনি। তিনি বলেন, চাঁদপুরে কাজ করে আমি খুবই খুশি এবং তৃপ্ত। এখানকার মানুষ খুব বেশি সহযোগী মনোভাবের। এখানে কাজ করার সুন্দর পরিবেশ রয়েছে।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে অনেক বরেণ্য ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠন রয়েছে। এ সংগঠনগুলোর অবস্থান একদিনে এমনি এমনি হয়নি। চাঁদপুরে অনেক মানুষ নীরবে-নিভৃতে মানবসেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। করোনাকালীন আমরা সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া লক্ষ লক্ষ টাকার সহায়তা হতদরিদ্র মানুষকে দিতে পেরেছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমি একটু প্রচারবিমুখ মানুষ। আমি মনে করি প্রচারের দরকার নেই, কাজটা কী সেটা খুব বেশি দরকার। প্রচারের চেয়ে কাজটা মানুষের জন্যে খুব বেশি প্রয়োজন। আমাদের কারোরই বড় হওয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই। অনেক বড় বড় মানুষ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন, তাঁদের চিহ্নটুকুও নেই। শুধুমাত্র তাঁদের কাজটুকু রয়ে গেছে। তাই আমিও পদ-পদবির লোভ করি না, নিজে বড় হতে চাই না, কাজটাকে বড় করে দেখি। আমি নিজের চয়েজে চাঁদপুরের ডিসি হয়নি এবং এই যে বদলি হয়েছি এখনও নিজের চয়েজে হইনি। আমাকে যেখানেই বদলি করা হোক, আমি কাজ করতে চাই।
মোঃ মাজেদুর রহমান খান আরো বলেন, একটি জেলায় বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত হলে সেটি যদি জেলা শহরে হয় তখন জেলা প্রশাসক, উপজেলায় হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা সামাল দিয়ে থাকেন। সাথে যুক্ত হন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া অন্যরা সব নীরব দর্শক হয়ে যান এবার তিনি যত বড় ক্ষমতাশালীই হোন না কেনো। কিন্তু এর বাইরে শুধুমাত্র একটি পেশার মানুষ সরব এবং সোচ্চার থাকে। তারাই পারে অপরাধ কর্মকা-গুলো আঙ্গুল উঁচিয়ে দেখিয়ে দিতে। তারা হলেন সাংবাদিক। একজন সাংবাদিক চাইলেই যে কোনো অপরাধ, অপকর্ম, অবৈধ কাজ বন্ধ করে দিতে পারেন।
চাঁদপুরবাসীর উদ্দেশ্যে বিদায়ী জেলা প্রশাসক বলেন, আপনাদের প্রতি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে ভালোবাসা রয়েছে। আমি যেখানেই থাকি আপনাদের প্রতি ভালোবাসা থাকবে। তিনি বলেন, কারো প্রতি কারো হৃদয়ে যদি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়, তবে সে ভালোবাসা কোনো শক্তি দিয়েই মোছা সম্ভব নয় এবং সে ভালোবাসা মোছার ক্ষমতা কারো নেই। সেই ভালোবাসা যদি সত্যিকারের ভালোবাসা হয়, তবে যতো বেশি মুছতে যাবেন ততো বেশি মায়া, টান ও আবেগ বেড়ে যাবে।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপ্রধানে ও সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ কাজী শাহাদাত এবং ২০২১ সালের কার্যকরী পরিষদের নবনির্বাচিত সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী।
উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, মির্জা জাকির, লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক আবদুর রহমান, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ ফেরদৌসহসহ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।