বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বিপর্যস্ত জনজীবন হরিণা ফেরিঘাটে গাড়ির জট
এ যেনো ভাদ্র মাসী বর্ষা। মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির সাথে যুক্ত হয়েছে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চাঁদপুরের জনজীবন। শহরের বিভিন্ন এলাকাসহ হাইমচরের ৫টি ও চাঁদপুর সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এতে করে পানিবন্দী অবস্থায় প্রায় ২০ হাজার লোক ভোগান্তিতে জীবন-যাপন করছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকশ' কাঁচা ঘরবাড়ি ও রাস্তা। পানিতে তলিয়ে আছে ফসলি জমি, পানিতে ভেসে গেছে মৎস্য চাষীদের লাখ লাখ টাকার মাছ। মেঘনার চরগুলোর চারদিকে পানি আর পানি। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ দিনযাপন করছে। এসব এলাকার বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, দোকানপাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জোয়ারের ৪/৫ ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ছে।
এ তথ্য আমাদের প্রতিনিধি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়।
অতিবৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে চাঁদপুর পৌর এলাকার অনেক রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লঞ্চঘাট অভিমুখের নিশি বিল্ডিং ও মাদ্রাসা সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। রেলওয়ে বাইতুল আমিন মসজিদ সংলগ্ন শপথ চত্বর থেকে কোর্টস্টেশন ও কালীবাড়ি মোড় সড়কটিও ভেঙ্গে গর্ত হয়ে আছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ফজলু জানান, রাস্তার কাজটি সঠিকভাবে করা হয়নি।
এ ছাড়া তালতলা আঃ করিম পাটওয়ারি বাড়ির সামনের রাস্তা, পুরাণবাজার রঘুনাথপুর, জাফরাবাদ দোকানঘর, পশ্চিম জাফরাবাদ, হরিসভা, রয়েজ রোড পলাশের মোড়সহ অন্য রাস্তাগুলো বন্যার পানি আর অতিবৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ দিকে হাইমচর চরভৈরবীর মাদরাসা শিক্ষক রেজাউল করিম রাজিব জানান, জোয়ারের পানির চাপে চরভৈরবীর গাউছুল আজম ছবরিয়া আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন কালভার্টের রাস্তার মাটি সরে গিয়ে রাস্তার বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। পানি যাতে না ঢুকতে পারে সেইস্থান স্থানীয়রা বালুভর্তি বস্তা ফেলে বন্ধ করেছে।
আলগী উত্তর ইউনিয়নের মহজমপুর গ্রামের পরিবারগুলো পানিবন্দী অবস্থায় এখনো ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
শনিবারও সান্ধ্যকালীন জোয়ারে মেঘনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, বৈরী আবহাওয়া আরো ২/১ দিন অব্যাহত থাকবে এবং তারপর জোয়ারে নদনদীর পানি কমতে শুরু করবে।
এ দিকে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় চাঁদপুর হরিণাঘাটে যানবাহনের জট লেগে আছে। চান্দ্রা জব্বরঢালীর মোড় পর্যন্ত গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখতে পেয়েছেন বলে গণমাধ্যমকর্মী ফোকাস মোহনার মাসুদ আলম জানিয়েছেন।
বিআইডবিস্নউটিসির হরিণা ফেরিঘাট ব্যবস্থাপক ফয়সাল আলম চৌধুরী জানান, চবি্বশ ঘন্টা ফেরি চলাচল করতে পারলে ঘাটে গাড়ি আটকা থাকবে না। জোয়ারে পানির উচ্চতা বেশি হওয়ায় দুইপাড়েই ফেরির রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ৫/৬ ঘন্টা ঘাট বন্ধ থাকে।
তিনি বলেন, শনিবার হরিণাঘাটে প্রায় ৩শ' গাড়ি ফেরি পার হবার অপেক্ষায় ছিল। আমাদের ৫টি ফেরি চালু আছে। জোয়ারের সমস্যা না হলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না।