• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত বৃদ্ধার মৃত্যু

প্রকাশ:  ১৯ আগস্ট ২০২০, ১০:৫৫ | আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২০, ১১:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

হামলার ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আদালতে মামলা দায়েরের পর আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা দায়েরের দিনেই আবারো হামলার শিকার হওয়া হালিমা খাতুন (৭৫) আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পর পর দুই দফা হামলার শিকার হওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২নং চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম দুঃখিয়া গ্রামে ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার ওই বৃদ্ধা বাড়িতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর পুলিশ বিকেলে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে জবেদ উল্ল্যা মাস্টার বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, পশ্চিম চরদুঃখিয়া গ্রামের জবেদ উল্ল্যা ও আঃ আউয়াল কালু গংয়ের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের ১৮ জুলাই জবেদ উল্ল্যা গংয়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জবেদ উল্ল্যা ও তার মা হালিমা খাতুনসহ ওই পরিবারের ৭ জন আহত হয়। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি আসলে গত ১০ আগস্ট দুপুরে পুনরায় তাদের উপর হামলা করে প্রতিপক্ষরা। এই হামলায় জবেদ উল্ল্যা, মা হালিমা খাতুন, ভাই আমিন উল্লাহ, ভাবী সাহিদা বেগম, ভাতিজা মনজুর হোসেন, ভাতিজি শারমিন আক্তার, নাজমিন আক্তার ও খালা আলিমের নেছা আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে হালিমা খাতুন মারা যান।

সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ বিকেলে পোস্টমর্টেমের জন্য লাশ উদ্ধার করেছে। এ ব্যাপারে জবেদ উল্ল্যা মাস্টার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জবেদ উল্ল্যা জানান, আঃ আউয়াল গং আমাদের সম্পত্তি দখল করে সম্পত্তির উপর পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। একটি সুপারি বাগানও তারা দখল করে রেখেছে। এসব বিষয়ে আমরা কথা বলতে গেলেই তারা আমাদের উপর নানাভাবে নির্যাতন করে। এরই জের ধরে চলতি বছরের ১৮ জুলাই শনিবার অতর্কিতে প্রতিপক্ষরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমার মা, ভাই, ভাবী, ভাতিজীসহ ৭ জন আহত হয়। হামলার ঘটনায় আমরা আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত সেই মামলটি ফরিদগঞ্জ থানাকে মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে ফরিদগঞ্জ থানা গত ১০ আগস্ট মামলাটি রজ্জু (নং-১৬। তাং-১০/৮/২০২০। ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬) করে। আমরাও ওই দিনই চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে আসি। দুপুরে পরিবারের সকলে ভাত খাওয়ার সময়ে তারা আবারো দলবলে আমাদের উপর হামলা করে। এতে মা হালিমা খাতুন, ভাই আমিন উল্লাহ, ভাবী সাহিদা বেগম, ভাতিজা মনজুর হোসেন, ভাতিজি শারমিন আক্তার, নাজমিন আক্তার, খালা আলিমেরনেছা আহত হয়। আমি, আমার মা হালিমা খাতুন কয়েকজনকে প্রথমে হাইমচর সরকারি হাসপাতালে ও পরে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকেই মা হালিমা খাতুনসহ আমরা বাড়িতে এসেই চিকিৎসা গ্রহণ করি। চিকিৎসাধীন মায়ের অবস্থা হঠাৎ অবনতি হলে মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা যান। তিনি জানান, প্রতিপক্ষরা মামলা দায়ের করায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে এই নির্মম ঘটনা ঘটানোর কারণে বৃদ্ধা মা মারাত্মক আহত হন।

সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই জাকারিয়া বিকালে চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম দুঃখিয়া গ্রামের মিজি বাড়ি থেকে হালিমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রকিব জানান, লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য চাঁদপুর পাঠানো হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে।