• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

করোনা ও বন্যা দুর্যোগে হাজী কাউছ মিয়ার বিরল মানবিক দৃষ্টান্ত

৩২ হাজার অসহায় মানুষ পেলো খাদ্য সহায়তা

প্রকাশ:  ১৯ আগস্ট ২০২০, ১০:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

দেশের যে কোনো দুর্যোগে অসচ্ছল, গরিব-অসহায় মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সিআইপি পদমর্যাদাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ করদাতা, প্রখ্যাত ব্যবসায়ী ও দানবীর হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়া। সেই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুরের এই কৃতী সন্তান বর্তমান করোনা এবং বন্যা পরিস্থিতিতে কর্মহীন, পানিবন্দী ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত চাঁদপুর ও শরিয়তপুরের ৩২ হাজার অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা পেঁৗছে দিয়ে তিনি তাঁর মানবিক দৃষ্টান্ত অব্যাহত রেখে চলেছেন।


গেলো রোজার ঈদের পর এবং এবার ঈদুল আজহা পরবর্তী সময়ে হাজী মোঃ কাউছ মিয়া তার যাকাত ফান্ড থেকে চাঁদপুর ও শরিয়তপুরের বিভিন্ন চর ও দরিদ্র এলাকার ১০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১০০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেন। এরমধ্যে চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন, মেঘনার পশ্চিম পাড়ের উত্তর তারাবুনিয়া, দক্ষিণ তারাবুনিয়া, হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ও শহরের কোড়ালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এই সহায়তা দেয়া হয়েছে।


হাজী কাউছ মিয়ার প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন দর্জি সাংবাদিকদের জানান, কাউছ মিয়ার প্রতিষ্ঠিত আব্বাস আলী হাইস্কুল থেকে গত ১২ আগস্ট শুরু হয়ে ১০ দিন চলছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।


প্রতিটি স্থানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে টোকেনের মাধ্যমে অসহায় মানুষের হাতে চাউলের প্যাকেট তুলে দেয়া হয়।


চাল বিতরণকালে শরীয়তপুর সখিপুর থানার উত্তর তারাবুনিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ সরকার, দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের মুরবি্ব ইউছুফ মোল্লা, চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী, হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ আলী মাস্টারসহ ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।


এই চাল বিতরণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় হাজী কাউছ মিয়ার প্রতিনিধি মোঃ দেলোয়ার হোসেন দর্জি সংশ্লিষ্ট এলাকার সকল জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।


উল্লেখ্য, 'মানুষ মানুষের জন্য' এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশের যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে গরিব-অসহায় মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন দেশের শীর্ষ করদাতা, দানবীর হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়া। নিজের জন্মভূমি চাঁদপুরবাসী ছাড়াও সারাদেশে একজন দানশীল মানুষ হিসাবে তিনি দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছেই শ্রদ্ধার এবং ভালোবাসার পাত্র। সেই ধারাবাহিকতায় বন্যাকবলিত গরিব-অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আবারো মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় হাজী মোঃ কাউছ মিয়া তাঁর দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ব্যক্তিবর্গকে দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়া লাখ লাখ মানুষের মাঝে নগদ অর্থ, চাল, ডাল ও শুকনো খাবারসহ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেন।


এবার ২০২০ সালের করোনা মহামারিতে এবং রোজার শুরু থেকে টানা ২০ দিন হাজী মোহাম্মদ কাউছ মিয়া তার নিজস্ব তহবিল এবং যাকাত ফান্ড থেকে চাঁদপুরের ২২ হাজার পরিবারের মাঝে ২শ' ৮০ মেট্রিক টন চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিতরণ করেছেন এবং ঢাকায় তাঁর সন্তানেরা ৩৫ হাজার অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। ১৯৫৪ সাল থেকে এ যাবৎ ১৯ বার দেশে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়। দেশের যে প্রান্তেই বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙ্গন, পাহাড় ধস আঘাত হেনেছে, করোনা দেখা দিয়েছে। প্রতিটি দুর্যোগের সময় তিনি বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণ সাহায্য দিয়েছেন। '৮৮-এর ভয়াবহ বন্যার সময় টানা এক মাস, '৯৮-এর বন্যার সময় প্রায় দুই মাস চাঁদপুরসহ আশপাশের এলাকার পানিবন্দী মানুষের দোরগোড়ায় রান্না করা খাবার পেঁৗছে দিয়ে গরীবের বন্ধু কাউছ মিয়া দেশ-বিদেশে বেশ সুনাম অর্জন করেন।


৯০ বছরে পা রাখা দানবীর এই মানুষটি আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং মনের আত্মতৃপ্তির জন্য সবসময় গরিব দুঃখী মানুষের পাশে থাকেন। আল্লাহ যতদিন তাকে বাঁচিয়ে রাখেন, ততদিন অসহায় মানুষের সেবা করে যাবেন।