জাতীয় শোক দিবসে জেলা প্রশাসনের ভার্চুয়াল সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল


১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও চাঁদপুর জেলা প্রশাসন যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করেছে। নানা কর্মসূচির মাঝে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা। জুম অ্যাপের মাধ্যমে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৫ আগস্ট শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় সভাটি শুরু হয়। ঢাকা থেকে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এ সভায় অংশ নেন। শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে পনর আগস্ট কালো রাতে কী জঘন্যতম হত্যাকা- ঘটেছিল এবং এর পেছনে যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কী ষড়যন্ত্র ছিলো তা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র রাষ্ট্র ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্যে নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্যই পঁচাত্তরের পনর আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। সে রাতে শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় নি, শুধু ৩২ নম্বর বাড়িতেই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় নি, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য এবং তাঁর নিকটাত্মীয়রা যে যেখানে থাকতেন সেখানেই খুনিরা নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের (দেশী-বিদেশী) ষড়যন্ত্রের নীলনকশায় এ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। তারা চেয়েছিল স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দিতে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বঙ্গবন্ধুর দুজন কন্যা সেদিন বিদেশে থাকায় তাঁরা বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তিসহ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ যেনো এ জাতি ভোগ করতে পারে সে জন্যই বঙ্গবন্ধু কন্যার সকল প্রয়াস।
ডাঃ দীপু মনি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধুর খুনি উল্লেখ করে বলেন, এই জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের যেনো বিচার করা না যায় সে ব্যবস্থা করেছে এই জিয়াউর রহমান। তার সময়ে সামরিক বেসামরিক অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে এ দেশকে মুক্তিযোদ্ধা শূন্য করে দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এতো হত্যা, এতো রক্ত, পাহাড়সম সব ষড়যন্ত্র এবং বাধা অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো উন্নয়নযজ্ঞ চলছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। তাই আমি আজকের এই দিনে প্রতিটি বাঙালির প্রতি আহ্বান জানাবো, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগকে আমরা শক্তিতে পরিণত করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবো।
জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানের সভাপ্রধানে এবং তাঁর সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুর রহমান, চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আনিসুর রহমান, এনএসআইর যুগ্ম পরিচালক মোঃ আজিজুল হক, স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের পক্ষে উপাধ্যক্ষ, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া, অ্যাডঃ সাইফুদ্দিন বাবু প্রমুখ। ১৮ জন আলোচক এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ৫৬জন এই আলোচনা সভায় অংশ নেন। সবশেষে বঙ্গবন্ধুসহ পনর আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কালেক্টরেট জামে মসজিদের খতিব মাওঃ মোশাররফ হোসাইন।