• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

৩০ বছরের ইতিহাসে এবারই ভাঙ্গনের ভয়াবহতা চরম পর্যায়ে

রাজরাজেশ্বরে পদ্মা-মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গন

বিলীন হবার মুখে নবনির্মিত সাইক্লোন সেন্টার

প্রকাশ:  ১৮ জুলাই ২০২০, ১৪:২১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে আবারো পদ্মা-মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। উত্তরাঞ্চল থেকে নেমে আসা বন্যার পানির প্রবল স্রোতে গত ১০/১২ দিন ধরে তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। ১৭ জুলাই শুক্রবার দিনভর নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গনের ভয়াবহতা আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এইদিন ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হবার উপক্রম হয় ৩তলা বিশিষ্ট নব-নির্মিত রাজরাজেশ্বর ওমর আলী স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টার। মাত্র ১ মাস আগে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এই ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।


এছাড়াও গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে প্রায় ২শতাধিক বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে আরো প্রায় ৫শ' বাড়িঘর ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।

ভাঙনের শিকার ওমর আলী স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারের ঠিকাদার প্রতিনিধি ও ইউপি সদস্য পারভেজ গজী রনি জানান, আমাদের ঐতিহ্যবাহী ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রায় ৭/৮ বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। যার ফলে এখানকার শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া এবং ইউনিয়নবাসীর কথা চিন্তা করে আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয় তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখানে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টার করে দিয়েছেন। এই ভবনটির সাইট সিলেকশনের সময় নদী এখান থেকে ১৫শ' মিটার দূরে ছিল। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে আমরা খুব দ্রুততার সাথে মানসম্মতভাবে এই ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করি। গত একমাস আগে কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করেছি।

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে নবনির্মিত ভবনটিতে বিদ্যালয়ের ক্লাস চলার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ফণীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।

এদিকে ভাঙনের শিকার স্থানীয়রা জানান, জোয়ার শেষে ভাটার সময়টাতেই ভাঙন শুরু হয়। তবে গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এবারই ভাঙ্গনের ভয়াবহতা চরম পর্যায়ে চলে গেছে। কারণ এ বছর পার্শ্ববতী জেলা শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ এলাকায় মেঘনার ভাঙ্গনরোধে যে বাঁধ দেয়া হয়েছে তার পানি প্রবাহের মুখটি দেয়া হয়েছে রাজরাজেশ্বরের দিকে। এর ফলে ওই জেলায় দেয়া বাঁধের ধাক্কা খাওয়া স্রোত ঝুঁকিপূর্ণভাবে এখানকার পাড়ে আঘাত হানছে।

তারা আরো জানান, আমরা কোনো ত্রাণ চাই না। আমরা চাই আমাদের ভিটেমাটি রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ভাঙ্গন ঠেকাতে আমরা স্থানীয় এমপি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী জানান, উজান থেকে প্রবল বেগে পানি চাঁদপুর হয়ে নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হওয়ায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চর এলাকায় মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে প্রচ- ঢেউ এবং ঘূর্ণিস্রোতের সৃষ্টি হয়। যার কারণে নদী আবারো বর্ষায় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। গত ১০ দিনের ভাঙ্গনে ইতিমধ্যেই ইউনিয়নের রাজারচর, খাসকান্দি, জাহাজমারাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ২শতাধিক বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে আরো প্রায় ৫শ' বাড়িঘর ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এই সভাপতি আরো জানান, ভাঙ্গন শুরু হবার আগেই আমরা সাইক্লোন সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ মানুষের বাড়িঘর রক্ষায় ইউএনও এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি।