• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

করোনা দুর্যোগেও থেমে নেই হাইমচরের মাদক কারবারীরা

প্রকাশ:  ০১ জুলাই ২০২০, ১২:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

করোনা সংকটে যখন গোটা দেশ স্থবির, তখন হাইমচরজুড়ে দিনরাত চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ সব ধরনের মাদক এখন প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে। করোনাভাইরাস আতঙ্কে বেশির ভাগ মানুষ ঘরবন্দী। বন্ধ অনেক দোকানপাট, যানবাহন চলাচল। ঠিক সে সময়েই চলছে হাইমচর উপজেলায় মাদকের কারবার। করোনায় অলস সময়ে পাড়া-মহল্লায় সহজে হাত বাড়ালে মাদকের দেখা মেলায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করোনা সংকট মোকাবিলায় একগুচ্ছ মানবিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় মাদক কারবারীরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেদার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।


করোনায় সারাদেশে যানবাহন চলাচল সীমিত থাকলেও ভিন্ন ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে মাদক কারবারীরা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে মাদক আনা-নেয়া করছে প্রতিনিয়ত। জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিস পরিবহন করার নামে মাদকের বড় ডিলারদের কাছ থেকে মাদক মাঝারি ডিলার, মাঝারি থেকে ক্ষুদ্র ডিলার বা খুচরা বিক্রাদের কাছে পেঁৗছে যাচ্ছে, শেষ ধাপে ক্রেতা বা মাদকসেবীদের হাতে। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকশা/ভ্যান ও হেঁটে হেঁটে মাদক পরিবহন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাইমচরের সচেতন ব্যক্তিবর্গ।

 


পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাইমচরে চলছে মাদক ব্যবসা। ক'দিন আগেও হাইমচরের পাড়া-মহল্লায় মাদক বিক্রি হতো অনেকটা প্রকাশ্যে। এখন প্রকাশ্যে নেই, তবে থেমে নেই মাদক বিক্রেতাদের তৎপরতা। বিভিন্ন কৌশলে তারা মাদক বিক্রি করছে। যোগাযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাইমচর উপজেলার কমলাপুর, জনতাবাজার, হাওলাদারবাজার, চরভৈরবী, হাইমচর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র্র আলগীবাজারের আশেপাশের এলাকা মিলিয়ে রয়েছে শতাধিক মাদক ব্যবসার হটস্পট। এই মাদক ব্যবসায়ীরা তৈরি করছে যুবসমাজের মাঝে নতুন নতুন মাদকসেবী, যেমনি এরা নেশায় আসক্ত হচ্ছে তেমনই নেশার টাকা জোগাড় করতে নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। হাইমচরে এখনই মাদকের আধিক্য বন্ধ না করা গেলে অচিরেই হাইমচর উপজেলা অপরাধ ও অপরাধীর রাজ্য হয়ে দাঁড়াবে। শেষ হয়ে যাবে শত শত যুবসমাজের জীবন।

 


সুশীল সমাজের অনেকেই জানান, এলাকার অনেক স্কুলগামী ছেলে থেকে শুরু করে বুড়োরা পর্যন্ত মাদকে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। পরিবারে পরিবারে অশান্তি বেড়েই চলেছে। মাদক হলো সমাজের ভয়াবহ সমস্যা, সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে পারলে সমাজে অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে বলে তারা জানান। মাঝে মধ্যে পুলিশের তৎপরতার কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা এখন প্রকাশ্যে না থাকলেও মাদকসেবীদের কাছে তারা ঠিকই মাদকদ্রব্য পেঁৗছে দিচ্ছে।

 


মাদক ব্যবসায় জড়িত এমন একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন আর মাদকসেবীরা পাড়া-মহল্লায় আসে না মাদক কিনতে। যারা নেশা করে তাদের কাছে আমাদের ফোন নম্বর রয়েছে। কল করলেই নির্দিষ্ট স্থানে পেঁৗছে দেয়া হয় মাদক। তবে এর জন্যে একটু বেশি দাম দিতে হয়।

 


তিনি জানান, আগের তুলনায় এখন মাদকের চাহিদা বেশি। এখনই যদি মাদকের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, সামনে এর আরো ভয়াবহ রূপ আশঙ্কা করছে সচেতন মানুষ। তাই অতি তাড়াতাড়ি মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন হাইমচরের সচেতন জনগণ।