চাঁদপুর-ঢাকা রূটে যাত্রী সঙ্কট : লঞ্চগুলোর অর্ধেক চলে, অর্ধেক চলছে না


চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে যাত্রী সঙ্কটে পড়েছে লঞ্চগুলো। ধারণ ক্ষমতার চারভাগের একভাগ যাত্রীও মিলছে না লঞ্চে। এমন পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে ১০টি লঞ্চের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রী সঙ্কট অব্যাহত থাকলে চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে আরো কিছু লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন লঞ্চ মালিক প্রতিনিধিরা।
বৈশি্বক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে ৬৫ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। ওই সপ্তাহে যাত্রীদের ব্যাপক চাপে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়। যাত্রীদের চাপ সামলাতে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে বিপাকে পড়তে হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেই পাল্টে গেছে সেই চিত্র।
একান্ত ঠেকায় না পড়ে কেউ এই সময় লঞ্চে যাতায়াত করতে চান না। যারা নিয়মিত চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে যাতায়াত করতেন তারা করোনা দুর্যোগে নিজেকে সুরক্ষার চেষ্টা করছেন।
চাকরিজীবীরা নিয়মিত আসা-যাওয়ার পরিবর্তে এখন কর্মস্থলে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে চাঁদপুরের অধিকাংশ ব্যবসায়ী অনলাইনের সাহায্যে পণ্য সামগ্রী কেনাকাটা করে কুরিয়ার সার্ভিসে নিয়ে আসছেন। এসব কারণে নৌপথে বিশেষ করে যাত্রীবাহী লঞ্চে চাপ কমেছে অধিক হারে।
চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে, বারেক হাজীর ৪টি লঞ্চের মধ্যে এখন চলছে ভোর ৬টার এমভি আল-বোরাক। এ কথা জানিয়েছেন হাজী সাহেবের মেঝো ছেলে মুন্না খান। এসপি মাহবুব সাহেবের ৫টি লঞ্চের মধ্যে সকাল ৭টা ২০ ও বিকাল ৩ টা ৪০-এর ২টি লঞ্চ চলছে বলে জানান চাঁদপুর ঘাটের সুপারভাইজার শওকত বেপারী। এ ছাড়া বোগদাদিয়া কোম্পানির লঞ্চ চলছে ৩ থেকে ৪ টা, ঈগল কোম্পানির ৩টার মধ্য ১ টা।
মালিক পক্ষের প্রতিনিধি তথা বেশ ক'জন ঘাট সুপারভাইজার জানান, 'করোনা সংক্রমণের ভয়ে যাত্রীরা লঞ্চে উঠতে চায় না। ধারণ ক্ষমতার চারভাগের একভাগ যাত্রীও পাচ্ছে না তারা। সিডিউল সময় অনুুযায়ী লঞ্চগুলোর মধ্যে অর্ধেক চলছে, আর অর্ধেক চলছে না।
চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১২ পর্যন্ত সিডিউল সময়ে ৩০টির মতো লঞ্চ চলাচল করত। চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে যাত্রী সঙ্কটে এখন লঞ্চগুলোর চলাচল অর্ধেকে নেমে এসেছে।
গত ৩১ মে সরকার লকডাউন তুলে নিলে পুনরায় চাঁদপুর-ঢাকা নৌ পথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। ৪/৫ দিন যাত্রীর ভীড় থাকলেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। লঞ্চগুলো স্বল্প সংখ্যক যাত্রী পাচ্ছে।
এ দিকে একটি সূত্র জানায়, যাত্রী সঙ্কটের অজুহাতে চাঁদপুর-ঢাকা নৌ রূটে বিভিন্ন কোম্পানির ১০টির মত লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নিয়মিত কিছু যাত্রী আছে যারা নির্ধারিত সময়ের লঞ্চ না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
বিআইডবিস্নউটিএর পরিবহন পরিদর্শক মাহতাব জানান, ঢাকা থেকে যে সব লঞ্চ চাঁদপুর ঘাটে আসে, সেগুলোই আবার ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ১শ' থেকে ২৫০ জন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে।
আবে জমজম লঞ্চের মালিক প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, করোনা মহামারিতে যাত্রী না পেয়ে ইতিমধ্যে ১০টির মতো লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এভাবে যাত্রী সঙ্কট দেখা দিলে চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে যেকোনো সময় লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ ধারণ ক্ষমতার যাত্রী পাওয়া না গেলে মালিকপক্ষ খরচ মেটাতে পারে না। তাই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখতে হয়।