ফরিদগঞ্জে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী খুনের ঘটনায় মামলা


ফরিদগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে ছুরিকাঘাত করে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতু (২০)কে খুনের ঘটনায় স্বামী আল মামুন মোহনকে প্রধান আসামী করে নিহত রিতুর চাচা লিয়াকত খান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মামলা গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে মোহনকে চাঁদপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার জন্যে নিলেও সে তা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এদিকে নিহত রিতুর পোস্টমর্টেম শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, নৃশংস এ খুনের ঘটনা বুধবার ইফতারপূর্ব সময়ে উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকায় ঘটে।
জানা গেছে, আড়াই বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মনতাজ মাস্টারের ছেলে আল মামুন মোহন ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া গ্রামের খান বাড়ির সেলিম খানের মেয়ে তানজিনা আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের পর সৌদি আরবে গেলেও গত দেড় বছর পূর্বে আল মামুন মোহন সৌদি আরব থেকে ফেরত আসে। ১৩ মে বুধবার বিকেলে সে তার নিজ বাড়ি রায়পুর থেকে শ্বশুর বাড়ি ফরিদগেঞ্জর গৃদকালিন্দিয়া আসে। ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতুর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রিতুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এক পর্যায়ে মেয়ের আর্তচিৎকারে মা পারভীন আক্তার ও ভাই প্রান্ত এগিয়ে আসলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করে মোহন। এ সময় সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকজন টের পেয়ে তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। রিতুকে দ্রুত ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েনেয়া হলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ফরিদগঞ্জ রাতেই পোস্টমর্টেমের জন্যে নিহত রিতুর লাশ উদ্ধার করে।
অপরদিকে গুরুতর আহত শাশুড়ি পারভীন আক্তার চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন এবং শ্যালক প্রান্ত গৃদকালিন্দিয়া বাজারে চিকিৎসা নিচ্ছে।
নিহত রিতুর মামী তাছলিমা বেগম জানান, সৌদি আরব থেকে মোহন চলে আসার পর বেকার অবস্থায় ছিলো। বিয়ের সময় রিতুকে দেয়া স্বর্ণালঙ্কার সবকিছু বিক্রি করে ফেলে সে। তার বাড়িতে বসবাস করার জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় রিতু স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইতো না। সে বাপের বাড়ি থেকেই পড়ালেখা করতো। এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে রিতুকে হত্যা করে এবং তার মা ও ভাইকে আহত করে মোহন।
ঘাতক মোহন ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় জানায়, তার স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত। তার প্রবাস থেকে পাঠানো সকল অর্থ তারা আত্মসাৎ করেছে। তাকে পাত্তা দিতো না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে ছুরিকাঘাত করেছে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রকিব জানান, লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্যে চাঁদপুর প্রেরণ করা হয়। নিহত রিতুর চাচা লিয়াকত খান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘাতক মোহন প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিবে বলে জানিয়েছে।