কালীবাড়ি থেকে পালবাজার : করোনার বিচরণ ক্ষেত্র!


চাঁদপুর জেলায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ক্রমাবনতির দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে চাঁদপুর শহরের অবস্থা বলতে গেলে ভয়াবহ। গতকাল পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত ৬০ জনের মধ্যে চাঁদপুর শহরেই ৩২ জন। গতকাল যে ১২ জন আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট এসেছে, তার মধ্যে ১১ জনই চাঁদপুর শহরের। এটি খুবই উদ্বেগজনক এবং শহরবাসীর জন্য অনেকটা ভীতির বিষয়।
এদিকে চাঁদপুর শহরের আক্রান্ত ৩২ জনের পরিচয় ও ঠিকানা বিশ্লেষণ করে দেখা গেলো যে, তাদের অধিকাংশই একটি এলাকার এবং ওই একটি এলাকায় মানুষের অবাধ বিচরণের কারণেই শহরের মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সেই এলাকাটি হচ্ছে কালীবাড়ি থেকে পালবাজার। এর আশপাশ হচ্ছে জোড়পুকুর পাড় এলাকা, কালীবাড়ি ও কুমিল্লা রোড এলাকার সকল মার্কেট, দোকান, রাস্তার দুপাশে প্রচুর ভ্যানগাড়ি, পুরো পালবাজার, বকুলতলা এলাকা, স্ট্র্যান্ড রোড, থানা ও হাসপাতাল এলাকা। এর যৌক্তিকতা খুঁজে বের করা হলো এভাবে যে, চাঁদপুর শহরের আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে মডেল থানার পুলিশ সদস্য ৮ জন, ট্রাফিক ১ জন, আক্রান্ত হওয়া এক এসআইর স্ত্রী ও ছেলে, সিভিল সার্জন অফিসের তিনজন, হাসপাতালের স্টাফ ও তাদের সন্তানসহ ছয়জন, হাসপাতালের সামনে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্টাফ তিনজন, বকুলতলা এলাকার দুইজন, বড় স্টেশন ক্লাব রোড এলাকার একজনসহ প্রায় ২২-২৩জন এই এলাকার। তার কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, কালীবাড়ি এলাকা থেকে শুরু করে কুমিল্লা রোড, পালবাজার ও স্ট্র্যান্ড রোড এলাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল এবং বিচরণ করে থাকে। পুরো পালবাজার সারাদিন খোলা থাকে। এমনকি গতকাল শহরে ১১ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনার পরও দেখা গেছে যে, কুমিল্লা রোডের দু'পাশে বেশ কিছু জুতার দোকান খোলা এবং মার্কেটের ভিতরে অনেক কাপড়ের দোকানও খোলা। এসব দোকান প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে অনেকটা চোর-পুলিশ খেলা করে দোকানগুলো খোলা রাখছে। কালীবাড়ি এলাকার ভূঁইয়া বিগ বাজারসহ সব ফলের দোকান সারাদিন খোলা থাকে। রাস্তার পাশে অসংখ্য ভ্যানগাড়ি থাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। শত শত মানুষ এই সব ভ্যানগাড়ি থেকে কেনাকাটা করে থাকে। সব মিলিয়ে এইসব এলাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। সে জন্য এসব এলাকার মানুষ খুব বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আর মানুষের বিচরণ দেখা যায় পালবাজার, কালীবাড়ি এলাকার ভূঁইয়া বিগ বাজার, সকল ফলের দোকান ও রাস্তার পাশে থাকা অসংখ্য ভ্যানগাড়ি কেন্দ্রিক। অনুমান করা যাচ্ছে, এসব এলাকার দোকানদারদের স্যাম্পল পরীক্ষা করলে অনেকের পজিটিভ পাওয়া যাবে।
পুরো শহরবাসী শহরের এই কয়টি এলাকায় গণমানুষের এমন অবাধ বিচরণ নিয়ে আতঙ্কিত এবং ভীত সন্ত্রস্ত। তাই শহরবাসীর মতামত হচ্ছে, কমপক্ষে এক সপ্তাহ হলেও চাঁদপুর শহরের পালবাজারের সকল পর্যায়ের দোকান, কালীবাড়ি এলাকার সকল দোকান এবং জোড়পুকুর পাড়, কুমিল্লা রোড, স্ট্র্যান্ড রোড ও বকুলতলা এলাকার সকল দোকান বন্ধ রাখা হোক। শুধুমাত্র ঔষধের দোকান খোলা থাকবে। তা না হলে চাঁদপুর শহরকে করোনাভাইরাসের থাবা থেকে রক্ষা করা যাবে না।