• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না জেলেরা

প্রকাশ:  ১৩ মে ২০২০, ১১:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মার্চ-এপ্রিল দু মাস ইলিশের পোনা রক্ষার নিষেধাজ্ঞা শেষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে পদ্মা-মেঘনায় মাছ আহরণে নেমেছে জেলেরা। কিন্তু যে পরিমাণ খরচ করে নদীতে নামছেন তাতে কোনোভাবে খরচ উঠছে না জেলেদের। বরং লোকসান দিতে হয়। তাই মেঘনা উপকূলীয় জেলেপাড়ার জেলেরা খুবই হতাশ। তারা তাদের নৌকা ও জাল এখন ডাঙ্গায় উঠিয়ে রেখেছেন।


গত ৯ মে শনিবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় জেলেপাড়ার জেলে ও ইলিশ আহরণকারী নৌকার মালিকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

 


চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৫২ হাজার ১৯০ জন। এর মধ্যে অধিকাংশ জেলেই পদ্মা-মেঘনায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। তারা মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় দুবারের অভয়াশ্রমকালীন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলেও অন্য পেশার সাথে সংযুক্ত হচ্ছে না। সরকার তাদের এ সময়ে খাদ্য সহায়তা ও অন্যান্য প্রণোদনা দিয়ে আসছে। তবে এ বছর জেলেদের অভিযোগ, তারা সরকারের খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

 


সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের জেলে আনোয়ার দিদার জানান, অভিযান শেষ হওয়ায় ৩০ এপ্রিল রাতে ৮ জন জেলে নিয়ে মেঘনায় ইলিশ শিকারে নেমেছি। সকাল পর্যন্ত যা ইলিশ পেয়েছি, তা বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমাদের খরচ হয়েছে আরো বেশি। যার কারণে নৌকা উপরে উঠিয়ে নোঙ্গর করে রেখেছি।

 


লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের জেলে হারুনুর রশিদ ও শাহজাহান শেখ জানান, নিষেধাজ্ঞার পরে একদিন ইলিশ আহরণে নেমেছি। ইলিশ না পাওয়ায় এখন আর নামছি না। কারণ নিষেধাজ্ঞার দু মাসে চাঁদপুরের বাইরে থেকে অসাধু জেলেরা এসে জাটকাসহ অন্য মাছ আহরণ করেছে। তাই নদীতে মাছ কম। মাছ না পাওয়ায় আমাদের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।

সাখুয়া গ্রামের জেলে নৌকার মালিক মামুন তপাদার ও জয়নাল বেপারী বলেন, নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কারেন্টজাল উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। যেসব জাল দিয়ে নদীতে রেণুপোনা ধ্বংস হয়, সেসব জাল নিষিদ্ধ করার জন্যে সরকারকে আইন করতে হবে। যেমন গুল্টিজাল দিয়ে নদীর সব ধরনের ছোট-বড় মাছ শিকার করা হচ্ছে। আমরা চাই সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার সময় নিয়োজিত নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুক এবং অসাধু জেলেদেরকে যেনো জাটকা নিধনের সুযোগ না দেয়, তাহলে সরকারের নিষেধাজ্ঞা সার্থক হবে এবং ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদ্বীপ দে জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে অনেক জেলেই জাটকা নিধন থেকে বিরত থাকেন। নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। একটু সময় পার হলে অবশ্যই নদীতে জেলেরা ইলিশ পাবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকী জানান, নিরাপদ নদী এলাকায় ইলিশের বিচরণ থাকে। নিষেধাজ্ঞার সময় যেভাবে জেলেরা একত্রে জাল ফেলে জাটকা নিধন করেছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমাদের জেলা টাস্কফোর্স করোনাভাইরাস প্রতিরোধকালীনও জাটকা নিধন থেকে জেলেদেরকে বিরত থাকার জন্যে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। জেলেরা যদি ছোট ইলিশকে বড় হওয়ার সুযোগ দেয় তাহলে এ সুফল তারা এবং দেশবাসী পাবে।

সর্বাধিক পঠিত