চাল চুরির মিথ্যা অপবাদের বিচার চায় মৈশাদী ইউপির মেম্বাররা
সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে কাজ করেছি : চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক


চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল চুরির অপবাদের নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে পরিষদের মেম্বারগণ। এ বিষয়ে গতকাল ৮ মে শুক্রবার সকালে পরিষদের পুরুষ এবং নারী মেম্বাররা একত্রিত হয়ে এমন মিথ্যা, বানোয়াট অপপ্রচারের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি যতোদিন পর্যন্ত এ অপপ্রচার ও অপবাদের বিচার না হবে, ততোদিন তারা কেউ সরকারি কোনো ত্রাণ বিতরণ করবেন না বলে জানান এবং প্রয়োজনে পদত্যাগ করার হুমকি দেন।
মেম্বারদের পক্ষে ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার বজলুল গণি জিলন বলেন, বৃহস্পতিবার মৈশাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লিটন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক শাহআলম মিয়াজী একটি অনাকাঙ্ক্ষিত-অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটান। আমরা নাকি চাল চুরি করি, ত্রাণ দেই না বলে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। কারণ ওইদিন আমরা চালই বিতরণ করিনি। এ পরিষদের ১২ জন মেম্বারের মধ্যে ১০ জনই ওয়ার্ড পর্যায়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। আমরা এ করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চেয়ারম্যানসহ প্রতিটা মুহূর্ত সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। এখানে চেয়ারম্যান যদি অনিয়ম করতো তবে সরকার দলের মেম্বার হয়ে আমরাই আগে প্রতিবাদ করতাম।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ইউনিয়নে মোট ২৬৭ জন জেলে রয়েছেন। তারা প্রত্যেকে ৪০ কেজি করে মোট ১০৬৮০ কেজি চাল বরাদ্দ পাবার কথা থাকলেও এ বছর অন্যান্য ইউনিয়নের মতো আমরাও কম বরাদ্দে ১৯৮ জনের জন্যে ৭৯২০ কেজি চাল পেয়েছি। যার ফলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ২৬৭ জনের চাল ১৯৮ জনের মাঝে ভাগ করে বিতরণ হয়ে আসছে।
৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোশারফ হোসেন বেপারী বলেন, সারা বাংলাদেশে মৈশাদী ইউনিয়নের সুনাম রয়েছে। আমাদের পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক সমগ্র চাঁদপুর জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। আমি দুই বারের নির্বাচিত মেম্বার। এই পরিষদে কখনই চাল চুরির মতো ঘটনা ঘটেনি। যারা এমন মিথ্যা অপবাদ-অপচার করছে, তারা আমাদের ইউনিয়নবাসীকে অপমান করছে। আমরা তার নিন্দা জানাই।
২নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল কালাম বেপারী এবং নারী মেম্বার ও ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শিল্পী আক্তার বলেন, আমাদের ইউনিয়নে প্রতিটা গরিব অসহায় পরিবারের মাঝে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরকারের খাদ্যসহায়তা পেঁৗছে দিচ্ছি। আমাদের পরিষদের নামে তারা চাল চুরির নামে মিথ্যা অপপ্রচার করে ইউনিয়নের সুনাম নষ্ট করছে।
৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফারুক সরকার বলেন, এ পরিষদের কেউ কখনোই চাল চুরি বা ত্রাণ আত্মসাৎ করেনি। এ বিষয়টি আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি।
এ সময় অন্যান্য মেম্বারের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাকিম গাজী, সেলিম বেপারী, মোঃ দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল বারেক, আবুল হোসেন খান মনা, সাহিদা বেগম ও জাহেদা বেগম।
চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, বাংলাদেশের ক্লিন ইমেজের লোক মমিন উল্লাহ পাটওয়ারী বীর প্রতীক। তিনি একজন সৎ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তাঁরই উত্তরসূরি আমরা। আমরাও তাঁর মতো জনগণের সেবায় মন-প্রাণ উজাড় করে কাজ করে যাচ্ছি। পরিষদে আমাদের দায়িত্ব পালন চার বছর হয়ে গেলো। সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে কাজ করেছি। সাংবাদিক ভাইয়েরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে পরিষদের সেই কার্যক্রম অনেক তুলে ধরেছেন। এটার কারণে বিভিন্ন প্রশাসনেও আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন। এর জন্যে আমি না, মৈশাদী ইউনিয়নবাসী গর্বিত এবং সারা বাংলাদেশে মৈশাদী ইউনিয়ন সবার কাছে মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এতে একটা শ্রেণি, একটা গোষ্ঠী ঈর্ষান্বিত হয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কোনো কারণ ছাড়াই যেভাবে আমাকে নয়, ইউনিয়নবাসীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কলঙ্কিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত করলো এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। নিন্দা জানানোর ভাষাও আমার নেই। তিনি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের বিষয়টিতে চাঁদপুর-হাইমচরের মাটি ও মানুষের নেত্রী আলহাজ ডাঃ দীপু মনি এমপির সুদৃষ্টি এবং হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
চেয়াম্যান মানিক বলেন, কিছু লোক ইউনিয়নে রাজত্ব কায়েম করতে চায়। শান্ত ইউনিয়নকে অশান্ত করার অপচেষ্টা করছে। মাননীয় মন্ত্রীর কাছে এ দুর্বৃত্তদের বিচারও তিনি দাবি করেন।
চেয়ারম্যান মানিক আরো বলেন, মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের সকল কর্মকা- সম্পর্কে জনগণ জানেন। চাল চুরির যে মিথ্যা সংবাদ প্রচার হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়াতে এর তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। দু-চারটা আগাছা, মাদকসেবী পেছনে অনেক কথাই বলবে। মৈশাদীর জনগণ তা বিশ্বাস করে না।