• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

পুরাণবাজার থেকে উধাও হওয়া ট্রলারের ১২শ' বস্তা চাল উদ্ধার

প্রকাশ:  ০৩ মে ২০২০, ১১:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর নদী বন্দরের পুরাণবাজার ঘাট থেকে ব্যবসায়ীদের ২৭শ' বস্তা চাল নিয়ে উধাও হওয়া ট্রলারের (বাল্কহেড) ১২শ' বস্তা চাল নারায়ণগঞ্জের বন্দরে একটি গোডাউন থেকে জব্দ করেছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এখনো সন্ধান মিলেনি উধাও হয়ে যাওয়া ট্রলারসহ বাকি ১৫শ' বস্তা চালের।

গত ২৯ এপ্রিল রাতে অভিযান চালিয়ে নরায়ণগঞ্জ বন্দরের মদনপুর কেওঢালা এলাকার একটি পোশাক কারখানার গোডাউন থেকে এ চাল উদ্ধার করা হয়। এগুলো চাঁদপুর থেকে চুরি হওয়া চাল এমনটা নিশ্চিত করেছেন বন্দরের ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ইশতিয়াক আশরাফ রাসেল।

জানা যায়, গত ২৮ এপ্রিল ভোরে চাঁদপুরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা পুরাণবাজার নদীর ঘাট থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ২৭শ' বস্তা চাল নিয়ে ট্রলার মাঝি মিলন পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে।

এদিকে ২৯ এপ্রিল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের মদনপুরের কেওঢালা এলাকার হায়দার নিট কম্পোজিটের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার এ চালের সন্ধান পান। গোডাউনটি মদনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হোসেন ভঁূইয়ার।

এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার বলেন, গোপন সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে গোডাউনটিতে অভিযান চালাই। সব মিলিয়ে ১২শ' বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। যুবলীগ নেতা জাবেদ চাল মজুদের বিপরীতে কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় চালগুলো জব্দ করাসহ গোডাউন সিলগালা করা হয়েছে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জে চাল উদ্ধারের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে চাঁদপুরে চুরি হওয়া চালের ব্যবসায়ীরা পুলিশের সাথে যোগাযোগ পূর্বক গত ০১ মে মাইক্রোবাসযোগে চাঁদপুরে দায়েরকৃত মামলা মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মুরশিদুল আলম ভঁূইয়াসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের কেওঢালা এলাকায় হাজির হন। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ খোরশেদুল আলম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুক্লা সরকার গোডাউনে রক্ষিত চাল যাচাই-বাছাই শেষে নিশ্চিত হন চাঁদপুর থেকে চুরি হওয়া চালই এ চাল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ধামগড় পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক ইশতিয়াক আশরাফ রাসেল জানান, চাঁদপুরে চুরি হওয়া চালের চালানের তথ্যের সাথে এই চালের মিল রয়েছে। তবে চালের সন্ধান মিললেও পুলিশ প্রশাসন মামলার জটিলতার কারণে জব্দ হওয়া চাল ব্যবসায়ীদের মাঝে ফেরৎ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং কোর্টের মাধ্যমে চাল ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান।

নতুন করে ধামগড় পুলিশ কোন মামলা করবে কিনা সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। এদিকে পুরাণবাজার চাল ব্যবসায়ীদের মাঝে এ ব্যাপারে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। তারা বলেন, ৪দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত উধাও হয়ে যাওয়া ট্রলার ও মালিকসহ মাঝির কোনো সন্ধান না পাওয়ায় আমরা হতাশ। এত বড় একটি ট্রলার কীভাবে হাওয়া হয়ে গেল তা আমরা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না। অপরদিকে ১২শ' বস্তা চালের হাদিস মিললেও যদি তা দ্রুততম সময়ে মালিক পক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া না হয় তাহলে এ চাল বিক্রির অযোগ্য হয়ে পড়বে। তারা বাকি ১৫শ বস্তা চালসহ ট্রলার উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন ও প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন। প্রশাসন যদি এ ব্যাপারে ত্বরিৎ ব্যবস্থাগ্রহণ না করেন তাহলে চাঁদপুর চাল ব্যবসায়ী সমিতি বড় ধরনের আন্দোলনে নামতে পারেন বলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাজমুল আলম পাটওয়ারী ইঙ্গিত দেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল আনুমানিক রাত ৩টার সময় চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারের ভূঁইয়ার ঘাট থেকে ব্যবসায়ীদের ২৭শ' বস্তা চাল নিয়ে রাতের অন্ধকারে উধাও হয়ে যায় সোনার মদিনা নামে একটি পরিবহন ট্রলার। পরে চাল উদ্ধারে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় জিডি করেন ক্ষতিগ্রস্ত চাল ব্যবসায়ীরা।